জুলাইয়ের শুরুতেই বড় পরিবর্তন দিল্লিতে। পুরোনো গাড়ির ক্ষেত্রে বড় নিষেধাজ্ঞা রাজধানী দিল্লিতে। ১৫ বছরের বেশি পুরনো পেট্রোলচালিত ও ১০ বছরের বেশি পুরনো ডিজেলচালিত গাড়িগুলিকে আর কোনও পেট্রোল পাম্প থেকে পেট্রোল, ডিজেল দেওয়া হবে না। পরিবেশ বাঁচানোর উদ্দেশ্যেই দিল্লি সরকারের এই সিদ্ধান্ত। এর ফলে প্রায় ৬২ লক্ষ পুরনো গাড়ি আজ থেকে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে।
দিল্লি শহরের ৫১ শতাংশ বায়ু দূষণ হচ্ছে গাড়ির ধোঁয়া থেকেই। এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে ‘সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট’-এর একটি রিপোর্টে। সেই কারণেই কঠোর নির্দেশিকা জারি করে দিল্লি ও তার আশেপাশের অঞ্চল, যেমন হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ ও রাজস্থানে পুরনো গাড়ির উপর কড়া পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে ‘কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট’।
এখন থেকে দিল্লির বিভিন্ন পেট্রোল পাম্পে বসানো হয়েছে বিশেষ অটোমেটিক নাম্বার প্লেট রিকগনিশন ক্যামেরা। এর মাধ্যমে গাড়ির নম্বর স্ক্যান করে সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহন ডেটাবেসের সঙ্গে মিলিয়ে দেখে নেওয়া হবে সেই গাড়ি নিষিদ্ধ কিনা। যদি কোনও গাড়ি পুরনো বলে শনাক্ত হয়, তাহলে সেই গাড়িতে জ্বালানি না দিয়ে সেই তথ্য সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে, যাতে ভবিষ্যতে সেই গাড়ি বাজেয়াপ্ত ও স্ক্র্যাপ করা যায়।
এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে দিল্লি পুলিশের পাশাপাশি বিশেষ ভাবে মোতায়েন করা হয়েছে পরিবহণ দফতর ও ট্রাফিক পুলিশকে। প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পেট্রোল পাম্পে পুলিশ কর্মীরা উপস্থিত থাকবেন এবং পুরনো গাড়ি শনাক্ত করে তাদের পেট্রোল ডিজেল নেওয়া থেকে আটকাবেন। এই পুরো প্রক্রিয়া যাতে শান্তিপূর্ণভাবে চলে, তার জন্য প্রতিটি পাম্পে অতিরিক্ত পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে। যদিও সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পেট্রোল পাম্প মালিকরা জানিয়েছেন, এত বড় সিদ্ধান্ত কার্যকর করার আগে অন্তত ১৫-৩০ দিনের জন্য কোনও পরীক্ষামূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে যারা শিক্ষিত নন কিংবা অন্য কোনো জায়গা থেকে দিল্লি হয়ে কোথাও যাচ্ছেন, তারা বিষয়টি সম্পর্কে জেনে না থাকলে সমস্যায় পড়বেন।
গাড়ির মালিকদের অভিযোগ, সব পুরনো গাড়ি দূষণ করে না। তাদের দাবি, যে সব গাড়ির ‘পলিউশন আন্ডার কনট্রোল’ সার্টিফিকেট আছে এবং যে সব গাড়িগুলি ভাল ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়, সে গুলিকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় ফেলা উচিত নয়। পুরনো গাড়ির মালিকেরা বলছেন, পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ যাতে না বাড়ে, সেটাও নিশ্চিত করা উচিত সরকারের।