বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। আদালত অবমাননার একটি মামলায় তাঁকে ছয়মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে এই মামলায় আরও এক ছাত্রলীগ নেতাকেও দুমাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বর্তমানে ভারতে রয়েছেন মুজিবকন্যা। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই প্রথম কোনও মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা করল সে দেশের আদালত।
আওয়ামী লিগের এক ছাত্রনেতার সঙ্গে শেখ হাসিনার ফোনালাপের অডিয়ো ফাঁস হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। সে দেশের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’তে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ফাঁস হওয়া অডিয়োতে ওই ছাত্র নেতাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার বিরুদ্ধে ২২৭টি মামলা হয়েছে, তাই ২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’। এই অডিয়োবার্তা ঘিরে বাংলাদেশ জুড়ে শোরগোল পড়ে যায়।
ভাইরাল হওয়া অডিয়োর সত্যতা যাচাই করা হয়। আর তা যে হাসিনারই কন্ঠ তা ফরেন্সিক পরীক্ষায় সামনে আসে। এর পরেই গত ৩০ এপ্রিল ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনা এবং ওই ছাত্রনেতা শাকিল আকন্দ বুলবুলের বিরুদ্ধে মামলা হয়। আদালত অবমাননার অভিযোগ দায়ের হয়। সেই মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং বুলবুলকে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু সেই সংক্রান্ত কোনও জবাব দেওয়া হয়নি বলে ওই সংবাদমাধ্যমের প্রকাশিত খবরে দাবি করা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, কোনও জবাব না আসায় গত ২৫ মে তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু সেই নির্দেশও মানা হয়নি বলে দাবি। আর এরপরেই হাসিনা এবং বুলবুলকে আদালত অবমাননার দায়ে ছয়মাস এবং দু’মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ শোনায়। তিন সদস্যের ট্রাইবুনালে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয়। দীর্ঘ শুনানি শেষে এহেন নির্দেশ।
ঘটনা হল, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল গঠন করেছিল হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার। একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য এই ট্রাইবুনাল গঠন করা হয়। আর তা গঠন করার ক্ষেত্রে বড় ভুমিকা ছিল মুজিবকন্যার। সেই ট্রাইবুনালই এদিন তাঁর ছয়মাসের সাজা ঘোষণা করল। শুধু তাই নয়, আরও বেশ কয়েকটি মামলায় হাসিনার বিরুদ্ধে জারি রয়েছে গ্রেফতারি পরোয়ানাও। ইতিমধ্যে হাসিনার প্রত্যাবর্তন চেয়ে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ইউনূস সরকার। যদিও এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত মোদী সরকার কোনও বার্তা দেয়নি