অবসরের পর নিয়মিত আয় নিয়ে চিন্তা থাকা স্বাভাবিক। বিশেষ করে যদি ঠিকঠাক পেনশন না থাকে তাহলে আরও সমস্যা। তাই সময় থাকতেই এমন একটি বিনিয়োগের ব্যবস্থা করে রাখা দরকার, যে বিনিয়োগ থেকে প্রতি মাসে স্থায়ীভাবে কিছু টাকা আসবে ঘরে। জানেন কি, পোস্ট অফিসেও রয়েছে এমন একটি স্কিম যেখান থেকে আপনি প্রতি মাসে পেনশন পেতে পারেন। এই স্কিমের নাম, “মাসিক আয় স্কিম বা পোস্ট অফিস মান্থলি ইনকাম স্কিম-পিওএমআইএস”। এই স্কিমে বিনিয়োগকারীদের ৭.৪ শতাংশ হারে সুদ দেয় সরকার। যার মাধ্যমে প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা উপার্জন করতে পারবেন আপনিও।
এই স্কিমে মাত্র ১,০০০ টাকা জমা করে অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে যে কোনও ব্যক্তি খাতা খুলতে পারেন। সর্বোচ্চ তিন জন মিলে একটি যৌথ অ্যাকাউন্টও খোলা যায়। নাবালক বা মানসিক ভাবে অক্ষম ব্যক্তির পক্ষে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন তার অভিভাবক। এই অ্যাকাউন্টের মেয়াদ ৫ বছর এবং এক বছর না হলে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা যায় না।
বিনিয়োগ সীমা অনুযায়ী, সিঙ্গল অ্যাকাউন্টে সর্বোচ্চ ৯ লাখ এবং জয়েন্ট অ্যাকাউন্টে সর্বোচ্চ ১৫ লাখ পর্যন্ত জমা রাখা যায়। জয়েন্ট অ্যাকাউন্টে বিনিয়োগের পরিমাণ সকল হোল্ডারের মধ্যে সমানভাবে ভাগ হয়। অ্যাকাউন্ট খোলার এক মাস পর থেকেই মাসিক সুদ পাওয়া শুরু হয়। তবে মাসিক সুদ তুলবেন না, তাহলে সেটিতে কোনও অতিরিক্ত সুদ লাগবে না।
এ বার আসা যাক, মাসে ৫,৫০০ টাকা রোজগারের হিসেবে। কেউ যদি সিঙ্গল অ্যাকাউন্টে সর্বোচ্চ ৯ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন, তাহলে ৭.৪ শতাংশ হারে বার্ষিক সুদের হিসেবে প্রতি মাসে ৫,৫০০ টাকা আয় হবে। আবার যদি কেউ ১৫ লাখ জয়েন্ট অ্যাকাউন্টে বিনিয়োগ করেন, তবে প্রতি মাসে ৯,২৫০ টাকা পর্যন্ত রোজগার সম্ভব। এই স্কিমে অ্যাকাউন্ট খোলা খুবই সহজ। নিকটবর্তী পোস্ট অফিসে গিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলার ফর্ম, প্যান কার্ড, কেওয়াইসি ডকুমেন্ট ও ছবি জমা দিলেই অ্যাকাউন্ট খুলে নেওয়া যায়। চাইলে আপনি মাসে, ত্রৈমাসিকে, অর্ধবার্ষিক বা বার্ষিক ভিত্তিতে সুদ তুলতে পারেন।
তবে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে, যদি কেউ মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অর্থ তুলে নিতে চান, তাহলে কিছু পেনাল্টি বা জরিমানা কাটা হয়। এক থেকে তিন বছরের মধ্যে বন্ধ করলে ২ শতাংশ এবং তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে বন্ধ করলে ১ শতাংশ কেটে বাকি টাকা ফেরত দেওয়া হয়। তাই একবার টাকা বিনিয়োগ করে অবসর জীবনে আর্থিক চিন্তা থেকে নিষ্কৃতি পেতে চাইলে এই পোস্ট অফিসের স্কিম আদর্শ। সরকারের গ্যারান্টি থাকায় এই স্কিম ঝুঁকিমুক্ত।