বুধবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ গুজরাটের মহিসাগর জেলার গম্ভীরা নদীর উপর একটি পুরনো সেতুর মাঝখান থেকে হঠাৎই একটি বড় অংশ ভেঙে পড়ে। এতে অন্তত চারটি গাড়ি নদীতে পড়ে যায় এবং এখন পর্যন্ত নয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ঘটনার পর থেকেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে আনন্দ ও ভদোদরা জেলাতেও।
স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, সেতুটি ১৯৮৫ সালে নির্মিত এবং মাঝে মাঝে রক্ষণাবেক্ষণ করা হত। তবে পুরনো হয়ে যাওয়াই এই দুর্ঘটনার বড় কারণ হতে পারে। সেতুটি ৯০০ মিটার দীর্ঘ এবং ২৩টি পিয়ারের উপর নির্মিত। দুর্ঘটনার পর ভদোদরা দমকল বিভাগের একাধিক ইউনিট, স্থানীয় বাসিন্দারা ও জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী (NDRF) একত্রে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে।
জাজবাত বাংলায় আরও পড়ুন
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নদীতে পড়ে যাওয়া গাড়িগুলির মধ্যে দুটি ট্রাক ও দুটি ছোট ভ্যান ছিল। দুর্ঘটনার ফলে আনন্দ ও ভদোদরার মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে, বহু মানুষ আটকে পড়েছেন রাস্তায়। গুজরাটের মন্ত্রী ঋষিকেশ প্যাটেল জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়েছেন এবং সেতু ধসের প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন।
তবে গুজরাটে সেতু বিপর্যয় নতুন বিষয় নয়। ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে মোরবিতে একশো তিরিশ বছরের পুরোনো একটা ঝুলন্ত ব্রিজ ভেঙে পড়ে, আর তাতে মারা যান অন্তত ১৩৫ জন। পরে দেখা যায়, ব্রিজটা ঠিকঠাক মেরামত না করেই খুলে দেওয়া হয়েছিল, আর সেই কারণেই এত বড় দুর্ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন
তারও আগে, ২০১৪ সালে সুরাতে একটা ফ্লাইওভার বানানোর সময় হঠাৎ করেই ৬৫০ টনের স্ল্যাব ভেঙে পড়ে যায়। সেই ঘটনায় ১০ জনের মৃত্যু হয়। তদন্তে দেখা যায়, ব্রিজের ডিজাইন ঠিক ছিল না আর ব্যবহৃত জিনিসপত্রের মানও খুব খারাপ ছিল। আর ২০২৩ সালে আমরেলিতে একটা নতুন ব্রিজ বানানোর সময় সেটার একদিক ভেঙে পড়ে। যদিও ওই ঘটনায় কেউ মারা যাননি বা চোট পাননি, কিন্তু কাজের গুণমান আর দেখভালের ওপর আবার বড়সড় প্রশ্ন ওঠে।
বুধবার মহিসাগরের ঘটনার পর ফের একবার প্রশ্ন উঠেছে রাজ্যের পরিকাঠামো সংক্রান্ত নিরাপত্তা এবং সেতুগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বহুদিন ধরেই এই সেতুর অবস্থা খারাপ ছিল, কিন্তু কোনো পদক্ষেপ করা হয়নি।