ভারতের চাপে বুধবারই সত্যজিৎ রায়ের বাড়ি ভাঙার কাজ বন্ধের নির্দেশ দেয় ইউনূস সরকার। শুধু তাই নয়, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে উচ্চপদস্থ আধিকারিকদেরও পাঠানো হয়। কিন্তু হঠাৎ করেই নয়া মোড়। যে বাড়িটিকে ঘিরে এত বিতর্ক, সেটি সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের নয় বলেই দাবি বাংলাদেশ সরকারের। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ বিদেশমন্ত্রকের তরফে একটি বার্তা দেওয়া হয়েছে। যেখানে দাবি করা হয়েছে, যে বাড়িটিকে ঘিরে এত বিতর্ক সেটির মালিক সরকার। এইও বিষয়ে বিভ্রান্তি না ছড়ানোর আবেদনও জানানো হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের তরফে।
বিবৃতিতে বাংলাদেশ বিদেশমন্ত্রকের দাবি, সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে বাড়িটির কোনও সম্পর্ক নেই। স্থানীয় জমিদার শশীকান্ত আচার্য চৌধুরী ওই বাড়িটি তৈরি করেছিলেন বলে দাবি। ইউনূসের নেতৃত্বে চলা অন্তবর্তী সরকারের আরও দাবি, জমিদারের বাড়িতে যারা কাজ করতেন, তাঁদের জন্য ওই বাড়িটি তৈরি করা হয়। জমিদার প্রথা অবলুপ্ত হওয়ার পর বাড়িটি সরকারের হাতে আসে। সেই অনুযায়ী, বর্তমানে বাড়িটির মালিকানা সে দেশের সরকারের হাতে।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’তে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম জানিয়েছেন, যে জমি বা বাড়িটি সত্যজিৎ রায় বা তাঁর পূর্বপুরুষের দাবি করা হচ্ছে, সেটি ঠিক না। ওই আধিকারিকের কথায়, সরকারি রেকর্ড ও নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে কোথাও তাঁদের কারও নাম পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ সরকারের নামে সম্পত্তিটি লিপিবদ্ধ বলেও জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম।
যদিও ‘প্রথম আলো’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছিলেন, ‘রায় পরিবারের ঐতিহাসিক বাড়ি এটি। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে বাড়িটি এখনো তালিকাভুক্ত না হলেও সত্যজিৎ রায়ের বংশধরের বাড়ি হিসেবে শতবর্ষ প্রাচীন বাড়িটি ছিল’। তাহলে ইতিহাস ভাঙার লজ্জা ঢাকতেই বাংলাদেশ সরকার পুরো বিষয়টি লুকাতে চাইছে? তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও বিবৃতিতে বাংলাদেশ সরকারের দাবি, বাড়িটির রাস্তার নাম হরিকিশোরের নামে রাখা। যিনি কিনা সত্যজিৎ রায়ের প্রপিতামহ। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীকে দত্তক নিয়েছিলেন হরিকিশোর রায়।
সরকারের বিবৃতি অনুযায়ী, হরিকিশোর রায় রোডে একটি বাড়ি ছিল রায় পরিবারের। কিন্তু তা অনেক বছর আগে বিক্রি করে দেওয়া হয় বলে উল্লেখ ইউনূস সরকারের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে।