শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অনেক আশা করে মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারকে ক্ষমতায় বসানো হলেও মাত্র এক বছরেই হতাশ সাধারণ মানুষ থেকে রাজনৈতিক নেতৃত্ব। এর আগে প্রধান উপদেষ্টার নানা কাজের প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নানা অভিযোগ আনলেও এবার সরাসরি জনগণের অনাস্থার মুখে পড়ছেন উপদেষ্টারাও।
সদ্য মাইলস্টোন কলেজে বিমান ভেঙে পড়ায় সেখানে বিক্ষোভের জেরে দীর্ঘ সময় অবরুদ্ধ হয়ে থাকেন দুই উপদেষ্টা। পাশাপাশি সচিবালয়ে বিশৃঙ্খলাও হয়। এই সব ঘটনা উপদেষ্টাদের প্রতি জনগণের অনাস্থা তৈরির ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান (মঞ্জু)। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ র রিপোর্ট অনুযায়ী প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে মজিবুর রহমান সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় জানান যে, সরকার কঠিন কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। তাঁর অভিমত, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের নায়কদের মতো ইউনূস সরকারেরও গ্রহণযোগ্যতা কমে গেছে। প্রধান উপদেষ্টা যদি প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে না পারেন, সুষ্ঠু নির্বাচনও নিশ্চিত না করতে পারেন, তাহলে তাঁর পদত্যাগ করাই ভালো।
পাশাপাশি ইউনূস সরকার এনসিপির প্রতি ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে অভিযোগ করেছেন গণ-অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক। তাঁর অভিযোগ সরকার নিরপেক্ষতা হারালে জনসমর্থনও হারাবে। এই সরকারের নেতৃত্বে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
অন্যদিকে যে এনসিপির প্রতি ইউনূস ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে অভিযোগ উঠেছে, সেই ছাত্রদলই ইউনূসের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এনেছে।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহর অভিযোগ মহম্মদ ইউনূসের স্বজনপ্রীতির সবচেয়ে বড় উদাহরণ স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। বিডি প্রতিদিনের খবর অনুযায়ী পথসভায় হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের একজন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা আছেন। আপনারা তাকে চেনেন? উনি ডঃ ইউনূসের ভাই-ব্রাদার কোটায় এসেছেন। তাঁর স্বজনপ্রীতির সবচেয়ে বড় উদাহরণ এই স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। তিনি আরও বলেন, এই স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কোনো প্রয়োজন নেই। ওনার একমাত্র যোগ্যতা তিনি গ্রামীণ ব্যাংকে ছিলেন এবং ইউনূসের খুব কাছের মানুষ।
এভাবেই ক্ষোভ বাড়ছে ইউনূস সরকার ও তাঁর উপদেষ্টাদের প্রতি, হারাচ্ছে আস্থা। গত এক বছরে কোনও উপদেষ্টা জনসমক্ষে সম্পদের হিসেব দাখিল করেননি বলে অভিযোগ তুলেছেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ রাশেদ খান। বৃহস্পতিবার দুপুরেই নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে এই মন্তব্য করেন রাশেদ। তাঁর অভিযোগ, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর উপদেষ্টারা বলেছিলেন, প্রতি মাসে তাঁরা নিজ নিজ দপ্তরের কর্মকর্তা ও নিজেদের সম্পদের হিসাব জনসমক্ষে দাখিল করবেন। কিন্তু সরকারের এক বছরে কোনও একটি মন্ত্রণালয় এ হিসাব দাখিল করেনি।