ঠিক কী হয়েছিল অপারেশন সিঁদুরে? কত জঙ্গি খতম, কটা জঙ্গিঘাটি দুরমুশ, পাকিস্তানকে ঠিক কীভাবে শাস্তি দেওয়া হয়? নানা মুনির নানা মত। ছেঁকে ধরে বিরোধীরা। লাগাতার আক্রমণ। বিজেপি সরকারকে মিথ্যেবাদী প্রমাণে মরিয়া বিরোধীরা। এই পরিস্থিতিতে অপারেশন মহাদেব, পহেলগাম জঙ্গিহানার তিন শয়তান খতম এবং মোদি-শাহের সংসদে আস্ফালন। জমে গেছে বর্ষাকালীন অধিবেশন। কীভাবে পাকিস্তানকে শিক্ষা দিয়েছে ভারত, আর কখনও কেন চোখ তুলে তাকাতে পারবে না মুনিরের দেশ, তারই ব্যাখ্যা দিলেন প্রধানমন্ত্রী।
অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন ভারতের কাছে করুণভাবে দয়া প্রার্থনা করেছিল পাকিস্তান। মঙ্গলবার লোকসভায় একথাই জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, পাকিস্তানের ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশনস ভারতের কাছে ফোন করে বলেন,”এবার থামুন, অনেক মেরেছেন, আর সহ্য হচ্ছে না, দয়া করে থামুন।” প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, অপারেশন সিঁদুর ছিল একটি সুপরিকল্পিত সামরিক পদক্ষেপ। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং-এর আগের বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করে মোদী বলেন, “আমরা কেবলমাত্র সন্ত্রাসবাদী ও তাদের পরিকাঠামোকে লক্ষ্য করেছি। পাকিস্তানকে আগে থেকেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, আমাদের টার্গেট শুধুই জঙ্গি ও তাদের ঘাঁটি।”
মোদী বলেন, “আমরা তিনটি বার্তা পরিষ্কারভাবে দিয়েছি। এক, যদি আমাদের দেশে সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়, আমরা জবাব দেব আমাদের পছন্দের সময়ে ও শর্তে। দুই, পরমাণু অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আর ভারতকে দমানো যাবে না। এবং তিন, যারা সন্ত্রাসে মদত দেয় ও সন্ত্রাসবাদ চালায়, তাদের আলাদা করে দেখা হবে না।”
তবে এই মন্তব্যের কিছু আগে বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী লোকসভায় প্রশ্ন তোলেন, “যদি সত্যিই শক্ত পদক্ষেপ করা হয়, তাহলে কেন রাত ১:৩৫ মিনিটে পাকিস্তানকে জানানো হয়, ভারতের লক্ষ্য শুধুই জঙ্গি স্থাপনা, আর আমরা কেন যুদ্ধ চাই না?” রাহুলের মতে, পাকিস্তানে আক্রমণ চালিয়ে আবার তাদের জানিয়ে দেওয়া যে, ভারত তাদের সেনাবাহিনী বা এয়ার ডিফেন্সে হামলা করবে না, এটা এক ধরনের আত্মসমর্পণ।
উল্লেখ্য, অপারেশন সিঁদুর শুরু হয়েছিল ৭ মে। ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলার জবাব দিতে ভারত এই অপারেশন চালিয়ে পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটিগুলি উড়িয়ে দেয়। এই অপারেশনের পর দু’দেশই যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নেয়। ভারতের এই সামরিক অভিযান এবং পরবর্তী প্রতিক্রিয়া স্পষ্ট করে দেয়, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ভারত এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি দৃঢ় ও কৌশলী।