বিশ্বের সব কিছুই কি নিয়মকানুন মেনে হয়? মাঝে মাঝে বেনিয়মেও হয়! আইন যেমন আছে আইনের ফাঁকও আছে, বলেন অনেকেই। কিন্তু একবার ভাবুন তো, কোন জায়গায় যদি ঘুরতে গিয়ে দেখেন একই রানওয়ে ব্যবহার করছে বিমান এবং ট্রেন, তাহলে? এমনই আর আশ্চর্য জায়গা হল নিউজিল্যান্ডের গিসবর্ন এয়ারপোর্ট। সাধারণ নিয়মকানুনকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে এ যেন সত্যিই অবাক করা দৃশ্য।
একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, এই বিমানবন্দরটি প্রায় ১৬০ হেক্টর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। এর মাঝখান বরাবর গিয়েছে একটি রেললাইন, পামারস্টন নর্থ-গিসবর্ন রেলপথ। এখানকার সময়সূচি অনুযায়ী প্রতিদিন সকাল ৬:৩০ থেকে রাত ৮:৩০ পর্যন্ত বিমান এবং ট্রেন চলাচল চালু থাকে।
জাজবাত বাংলায় আরও পড়ুন
নর্থ-গিসবর্ন এয়ারপোর্ট বলুন বা নর্থ-গিসবর্ন রেলপথ বলুন, এখানে এক অদ্ভুত নিয়মে চলে ট্রেন ও বিমানের চলাচল। যখন ট্রেন যায়, তখন বিমান দাঁড়িয়ে থাকে, আবার যখন বিমান নামে বা উড়ে যায়, তখন থামিয়ে রাখা হয় ট্রেন। এই পুরো প্রক্রিয়ার নিয়ন্ত্রণের গুরু দায়িত্ব পালন করে চলেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা যেমন রেলের সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ করে বিমান ওঠানামার সময় ট্রেনকে থামিয়ে রাখেন, তেমনই বিমানের গতিবিধি তাঁরাই দেখভাল করেন।
এই রেলপথটি গিসবর্ন সিটি ভিন্টেজ রেলওয়ের অন্তর্ভুক্ত, যেখানে চলে সেই মান্ধাতার আমলের ধোঁয়াওঠা রেলগাড়ি। বছরে প্রায় ১৫ বার এই ট্রেন রানওয়ে পার হয়, বিশেষ করে গরমের সময় যখন পর্যটকদের ভিড় বেশি থাকে তখন।
গিসবর্ন বিমানবন্দরটি নিউজিল্যান্ডের ৬২টি বিমানবন্দরের একটি। এটি এলগিন লাকায় অবস্থিত। ছোট হলেও এই বিমানবন্দর দিয়ে প্রতি বছর ১.৫ লাখেরও বেশি যাত্রী যাতায়াত করেন এবং প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৬০টি ডোমেস্টিক ফ্লাইট চালু থাকে। প্রধান রানওয়ের পাশাপাশি এখানে আরও তিনটি ছোট রানওয়ে রয়েছে।
আরও পড়ুন
বিশ্বে এটিই একমাত্র সক্রিয় বিমানবন্দর, যেখানে এখনও ট্রেন ও বিমান একসঙ্গে একটি রানওয়ে ব্যবহার করে। একসময় অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়ার উইনইয়ার্ড বিমানবন্দরেও এমন ব্যবস্থা ছিল, কিন্তু সেখানে ২০০৫ সালে রেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
গিসবর্ন বিমানবন্দর শুধু একটি যাতায়াতের মাধ্যমই নয়, এটি আশপাশ অঞ্চল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। অসাধারণ সমুদ্রতট, বিস্তৃত সবুজ এলাকা আর নিরিবিলি পরিবেশের প্রবেশদ্বারও বটে। তাই দেখে পর্যটকরা অভিভূত হয়ে যান। এই দৃশ্য অনেক সময় ক্যামেরাবন্দি হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরালও হয়।