নামে রাস্তা, অথচ বাস্তবে জলবন্দি কাদাপথ। অসুস্থ রোগীকে কাঠের দোলনায় চাপিয়ে হাসপাতালের পথে নিয়ে যেতে হয় পরিবারের লোকেদের। লাগাতার বৃষ্টিতে রাস্তা হয়েছে জলাশয়। তার উপর দোসর হল কাদা। তিনচাকা বা চারচাকা তো দূর অস্ত্, সাইকেল নিয়ে যাওয়ারও জো নেই। তাই রোগীকে বাঁচাতে হাসপাতালে যেতে চওড়া কাঁধ আর কাঠের দোলনাই ভরসা সুন্দরবন লাগোয়া হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের গোবিন্দকাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০৮নং বুথের মালেকান ঘুমটির বাসিন্দাদের। রাস্তা সংস্কারের দাবিতে গ্রামবাসীদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ দীর্ঘদিনের। কিন্তু স্থানীয় বিধায়ক থেকে স্থানীয় প্রশাসন কাজের কাজ কিছুই করেননি বলে অভিযোগ। গোটা গ্রামের রাস্তার হাল আরও বেহাল হয়েছে। জল-কাদার পাশাপাশি সমস্ত রাস্তাই খানাখন্দে ভর্তি। ফলে দিন দিন জীবন যেন নরক যন্ত্রণা হয়ে উঠেছে সুন্দরবন লাগোয়া গোবিন্দকাঠি গ্রামে।
গোবিন্দকাঠির দীর্ঘদিনের এই সমস্যার প্রতিবাদে এলাকার মানুষ একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ দেখান। স্থানীয়দের বক্তব্য “হিঙ্গলগঞ্জের বিধায়ক দেবেশ মন্ডল যখন এই গোবিন্দকাঠির পঞ্চায়েত প্রধান ছিলেন, তখন থেকেই রাস্তার হাল খারাপ। তখন থেকেই তিনি শুধু বারে বারে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু এই রাস্তা আর হয় না।” বিজেপির রাজ্য মিডিয়া সেলের মুখপাত্র ও স্থানীয় বাসিন্দা দীপঙ্কর সরকার বলেন, “কোনওদিন এরকম রাস্তা দেখিনি। হিঙ্গলগঞ্জের বিধায়কের বাড়ির পাশে এত বেহাল রাস্তা অকল্পনীয়। তৃণমূল সরকারের জমানায় কী কাজ হচ্ছে, সেটা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছে। আগামী দিনে মানুষ তার মোক্ষম জবাব দেবে।” অন্যদিকে গোবিন্দকাঠির রাস্তা ও অনুন্নয়নের বিষয় নিয়ে হিঙ্গলগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক “মিডিয়ার গল্প ” বলে কটাক্ষ করার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, “ওখানে তো রাস্তার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। হিঙ্গলগঞ্জ জুড়ে প্রতিদিন নতুন নতুন রাস্তার কাজ শুরু হচ্ছে। ওই এলাকায় সমস্ত রাস্তার কাজই হয়ে গিয়েছে। যেটুকু বাকি রয়েছে, সেটা করার জন্যই স্থানীয়রা হয়তো বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। খুব দ্রুতই ওই রাস্তা সংস্কারের কাজ শেষ হবে। আর যা যা বলা হচ্ছে, তা হল মিডিয়ার বাড়াবাড়ি ও গালগল্প। আপনারা চোখ দিয়ে দেখুন গোবিন্দকাঠিতে কতটা উন্নয়ন হয়েছে। মিডিয়া ও মোদি এভাবে দেশটাকে শেষ করবে। ” শাসকদলের বিধায়ক যতই স্বপক্ষে গলা ফাটান বাস্তবের ছবি অন্য কথাই বলছে। এই পরিস্থিতিতে ছাব্বিশে জীবন যন্ত্রণার যোগ্য জবাব দিতে চায় গোবিন্দকাঠি।
