বৃহস্পতিবার ভারতের অর্থনীতিকে “মৃত অর্থনীতি” বলে কটাক্ষ করেছেন মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, “ভারত ও রাশিয়া একসাথে তাদের মৃত অর্থনীতি নিয়ে ডুবে যাক, তাতে আমার কিছু যায় আসে না।” ট্রাম্পের মন্তব্যকে সঠিক বলে দাবি করলেও, সেই দাবি নস্যাৎ করে দিলেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর। রাহুলের মন্তব্য থেকে পিঠ বাঁচিয়ে চলছেন কংগ্রেস সাংসদ কার্তি চিদম্বরমও।
ট্রাম্প আরও দাবি করেন, ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য খুবই কম এবং ভারতের আমদানি শুল্ক বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এই মন্তব্যের ঠিক পরেই, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ট্রাম্পের বক্তব্যকে সমর্থন করে বলেন, “তিনি ঠিকই বলেছেন, এটা সবাই জানে, শুধু প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী ছাড়া।” তবে রাহুল গান্ধীর এই মন্তব্যের সঙ্গে একমত নন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর। শুক্রবার পার্লামেন্টের বাইরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “ট্রাম্প যা বলছেন তা ঠিক নয়, আর আমরা সবাই তা জানি।”
একইভাবে, কংগ্রেস সাংসদ কার্তি চিদম্বরমও রাহুল গান্ধীর বক্তব্য থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখেন। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “ট্রাম্প এমন একজন রাজনীতিক, যিনি এর আগেও বহু দেশ ও নেতাকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। পরে আবার তাঁদের সঙ্গেই সম্পর্ক তৈরি করেছেন। ভারত ও আমেরিকা দুই বড় অর্থনীতি, যাঁদের পরস্পরের প্রয়োজন আছে। এমন মন্তব্যে এই সম্পর্ক নষ্ট হবে না।”
রাজ্যসভার সাংসদ রাজীব শুক্লাও ট্রাম্পের বক্তব্যকে “সম্পূর্ণ ভুল” বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা মোটেই দুর্বল নয়। কেউ যদি ভাবেন যে আমাদের অর্থনীতি ধ্বংস করা সম্ভব, তবে সেটা তাঁদের বোঝার ভুল। ট্রাম্প বিভ্রমে রয়েছেন।”
উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত মন্তব্যে কংগ্রেসের ভেতরেই দেখা গেছে ভিন্নমত। তবে তা অবশ্য নতুন নয়। অপারেশন সিঁদুর নিয়ে লোকসভায় দীর্ঘ আলোচনায় কংগ্রেস দলের হয়ে বক্তব্য রাখার সুযোগ পাননি দুই অভিজ্ঞ সাংসদ মনীশ তিওয়ারি ও শশী থারুর। কংগ্রেস সাংসদদের ‘সাইডলাইন’ করার অভিযোগে টুইটারে গানের ভাষায় দলের প্রতি অভিমান প্রকাশ করেছিলেন মনীশ। শশী থারুর আগেই বলেছিলেন, “জাতীয় স্বার্থকে আমি দলীয় রাজনীতির উপরে রাখি।” তাঁকে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়া হলেও তিনি অপারেশন সিঁদুর নিয়ে আলোচনা এড়িয়ে যান। পাকিস্তানবিরোধী আন্তর্জাতিক জনমত গঠনের জন্য গঠিত সাতটি সর্বদলীয় প্রতিনিধি দলে ছিলেন এই দুই কংগ্রেস সাংসদ। বারবার রাহুলের উল্টো সুরে কথা বলেছেন দু’জনেই। তাই স্বাভাবিক ভাবেই দলে থেকেও বেসুরো দুই সাংসদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।