ভারতীয় তেল আমদানিকারক সংস্থাগুলি রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করেছে, এমনই ঘোষণা করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এজন্য ওই সংস্থাগুলিকে ধন্যবাদও জানালেন তিনি। একই সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রশ্ন তুললেন, এই খবরটি আদৌ সত্য কি না, সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিত নন।
দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে মসনদে ফেরার পর ট্রাম্প বিশ্ব ও রাজনীতির মঞ্চে নিজেকে অন্যতম সেরা নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সব ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছেন। যে কারণে তিনি সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শুরু হওয়া যুদ্ধ থামাতে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিয়েছেন বলেও দাবি করেন। ট্রাম্প বারবার নিজেকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দাবি করলেও কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কোনও উত্তর দেয়নি। গত তিন বছর ধরে ভারত রাশিয়া থেকে খনিজ তেল আমদানি করছে। এই ব্যাপারটা একেবারেই না পসন্দ ট্রাম্পের। কিন্তু নয়াদিল্লি ট্রাম্পের সেই আপত্তিকে ধর্তব্যের মধ্যে না আনায় আমেরিকা ভারতের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। শুধু তাই নয়, রাশিয়া থেকে তেল কেনা বজায় রাখার জন্য জরিমানাও ধার্য করার সিদ্ধান্ত নেয় ট্রাম্প প্রশাসন । রাশিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু করার পর গোটা বিশ্ব অর্থনীতিতে কার্যত এক ঘরে হয়ে আছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ভারত অনেকটাই সস্তায় তেল কিনছে মস্কোর কাছ থেকে। গত তিন বছর ধরে রাশিয়া থেকে যে সমস্ত দেশ তেল আমদানি করছে, তাদের মধ্যে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। ভারতের এই ভূমিকায় প্রবল অসন্তুষ্ট ট্রাম্প। মার্কিন প্রশাসন মনে করছে, এভাবে তেল আমদানি করে ভারত কার্যত রাশিয়াকে আর্থিক সাহায্য করছে। তেল বেচে পাওয়া অর্থই রাশিয়া বিনিয়োগ করছে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে। সে কারণেই ভারতীয় তেল আমদানি কারক সংস্থাগুলিকে রাশিয়া থেকে তেল না কেনার হুশিয়ারি দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
এরই মধ্যে ৩০ জুলাই ভারতীয় পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করার সিদ্ধান্ত নেন ট্রাম্প। একইসঙ্গে তেল আমদানি বজায় রাখার জন্য অতিরিক্ত জরিমানা ধার্য করার সিদ্ধান্তও ঘোষণা করেন। তার দুদিন পরেই ট্রাম্প জানালেন, ভারতীয় তেল আমদানিকারক সংস্থাগুলি রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করেছে। এই বিষয়টি যদি ঠিক হয় তাহলে তার জন্য ভারতীয় তেল আমদানিকারক সংস্থাগুলিকে ধন্যবাদ জানাতেই হয়।
যদিও ট্রাম্পের এই ঘোষণা বা দাবি সম্পর্কে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক কোনও মন্তব্য করেনি। মন্তব্য আসেনি ভারতীয় তেল আমদানিকারক সংস্থাগুলির কাছ থেকেও। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, ভারত আমেরিকা সম্পর্ক আগের মতোই মজবুত আছে। দুই দেশ এই সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। তবে ট্রাম্পের এই মন্তব্য নিয়ে কোনও সরাসরি উত্তর দেননি তিনি।
Leave a comment
Leave a comment