চলছে শ্রাবণ মাস। কথিত আছে, শিবের প্রিয় মাস এই শ্রাবণ। শ্রাবণ মাসে সারা দেশের শিবভক্তদের মধ্যে আলাদাই রোমাঞ্চ। এই পবিত্র মাসে সাহস্রলিঙ্গ ও কোটিলিঙ্গেশ্বরের মতো শিবমন্দিরগুলোয় ভিড় বাড়তে থাকে। তবে এবার গুজরাটের সুরাট শহরের পালের একটি মন্দির নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে। কারণ, এখানে গড়ে উঠেছে এমন এক মন্দির যেখানে একসাথে ১০১১টি শিবলিঙ্গের পুজোর সুযোগ পাচ্ছেন ভক্তরা।
সুরাটের পালের মা মেলদী মহাকালী শক্তিধাম আশ্রম-এ তৈরি হয়েছে এক অভিনব ‘সাহস্রলিঙ্গ-কোটিলিঙ্গ’। এখানে প্রধান এক বিশাল শিবলিঙ্গের ভিতর বসানো হয়েছে ১০১১টি নর্মদেশ্বর শিবলিঙ্গ। যার উপরে স্থাপন করা হয়েছে এক বিশেষ শিবলিঙ্গ।
প্রাচীন শাস্ত্র অনুসারে, ভগবান বিষ্ণু স্বয়ং এক সময়ে শিবকে এক হাজার নামে ডেকে পুজো করেছিলেন। এই মন্দির সেই ঐতিহ্যকেই সম্মান জানায়। এখানে একবার পুজো করলেই ১০১১টি অভিষেকের ফল পাওয়া যায় বলে মনে করা হয়। মন্দিরের পুরোহিত জানান, ‘এই সাহস্রলিঙ্গে বসানো হয়েছে ১০১১টি নর্মদেশ্বর শিবলিঙ্গ। আর উপরের মণি লিঙ্গের দর্শন করলেই নাকি ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গের দর্শনের পূর্ণফল লাভ হয়।’
এই মহৎ উদ্যোগের মূল ভাবনা এসেছে রমেশ গিরি বাপু গোস্বামী-র কাছ থেকে। তাঁর লক্ষ্য ছিল, এক জায়গায় এমন এক পবিত্র স্থান তৈরি করা, যেখানে ভক্তরা সহজেই হাজারো শিবলিঙ্গের আশীর্বাদ পেতে পারেন, বহু দূর যাত্রা না করেই।
নর্মদা নদী সংলগ্ন পাথর থেকে গঠিত এই নর্মদেশ্বর লিঙ্গ অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করা হয়। এগুলো স্বয়ং গঠিত শিবরূপ বলে পূজিত হয়। শিব পুজো করলে শান্তি, সৌভাগ্য ও সমৃদ্ধি লাভ হয় বলে বিশ্বাস। একসঙ্গে হাজার শিবলিঙ্গের পুজো শিব ও শক্তির মিলনের প্রতীক, যেখানে শক্তি, ভক্তি, ও সাধনার একত্রে প্রকাশ ঘটে।
ক্রমশ এই মন্দিরের কথা ছড়িয়ে পড়ছে ভক্তদের মধ্যে। বিশেষ করে শ্রাবণ মাসে বহু মানুষ ভিড় করছেন এই মন্দিরে। সারা দেশ ঘুরে জ্যোতির্লিঙ্গ দর্শনে না গিয়েও, এখানেই ভগবানের আশীর্বাদ প্রার্থনা করছেন ভক্তরা ও পাচ্ছেন গভীর আধ্যাত্মিক অনুভূতি। সুরাটের এই নতুন মন্দির এখন হয়ে উঠছে ভক্তদের কাছে এক দারুণ বিকল্প তীর্থস্থান, যেখানে শান্তি, শক্তি ও শিবের আশীর্বাদ মিলছে একসঙ্গে। এটাই ভক্তদের বিশ্বাস।