সোমবার ডিএ মামলার শুনানি হল না সুপ্রিম কোর্টে। তবে মঙ্গলবার থেকেই প্রয়োজনে প্রতিদিন শুনানি করে এই মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করা হবে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি সঞ্জয় কারোল এবং বিচারপতি পি কে মিশ্রর বেঞ্চ। সোমবার আদালতে মামলাটি উঠলে প্রথমেই রাজ্যের তরফে আইনজীবীর পক্ষ থেকে সাতদিন সময় চেয়ে আগামী সোমবার শুনানির আর্জি জানানো হয়। অন্যান্য পক্ষও শুনানির জন্য সময় চায়। কিন্তু বিচারপতি কারোল প্রশ্ন তোলেন, কেন সমস্ত পক্ষ ডিএ মামলার শুনানির জন্য প্রস্তুত নয় ? তিনি জানিয়ে দেন, আর কাউকেই কোনও সময় দেওয়া হবে না। মঙ্গলবার থেকেই মামলার শুনানি হবে। সব পক্ষকে তার মধ্যে প্রস্তুত থাকতে হবে।
গত ১৬ মে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ র ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দেবার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। ছয় সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছিল তার জন্য। কেন সময় মতো সেই নির্দেশ পালন করা হলো না, এ দিন সেই প্রশ্নও তোলে সর্বোচ্চ আদালত। রাজ্যের পক্ষে জানানো হয়, আদালতের নির্দেশ তারা কার্যকর করতে চায়, কিন্তু সময় লাগবে। কারণ ২৫ শতাংশ বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মেটাতে গেলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। ২০২৫-২৬ সালের বাজেটে এমন কোনও বরাদ্দ নেই। সেই অর্থ যোগাড় করতে প্রয়োজনে ঋণ নিতে হবে রাজ্যকে। তার জন্য কেন্দ্রের অনুমতি দরকার।
বিগত শুনানিতে রাজ্য সরকার জানিয়েছিল, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মোট বকেয়া ডি এর পরিমাণ ১১,৮৯০ কোটি টাকা। পেনশন প্রাপকদের বকেয়া ১১,৬১১ কোটি টাকা। এছাড়াও রাজ্য সরকার পরিচালিত অন্যান্য সংস্থাগুলির কর্মীদের পাওনা ১৮,৩৬৯ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে মোট বকেয়ার পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি। সম্পূর্ণ বকেয়া মেটাতে গেলে রাজ্যের আর্থিক অবস্থা বেহাল হয়ে যাবে।
পাশাপাশি রাজ্যের যুক্তি ছিল, মহার্ঘ ভাতা কর্মীদের মৌলিক অধিকার নয়। ডিএ দেওয়া রাজ্যের ঐচ্ছিক বিষয়, বাধ্যতামূলক নয়। কেন্দ্র যে হারে ডিএ দেয়, তা রাজ্যের উপর প্রযোজ্য নয়, কারণ কেন্দ্র ও রাজ্যের আর্থিক করকাঠামো আলাদা। এছাড়া রাজ্য সরকার এমন অনেক জনমুখী প্রকল্প রূপায়ণে অর্থ খরচ করে যা অন্য রাজ্যে নেই। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, অন্তর্বর্তী নির্দেশ মেনে ২৭ জুনের মধ্যে বকেয়া ডিএ-র অন্ততপক্ষে ২৫ শতাংশ মেটাতেই হবে রাজ্যকে।
গত দুই বছর ধরে একাধিক কারণে বারবার সর্বোচ্চ আদালতে পিছিয়ে গেছে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের প্রাপ্য মহার্ঘ ভাতা সংক্রান্ত মামলা। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার থেকেই লাগাতার শুনানি করে এই মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করা হবে বলে সর্বোচ্চ আদালত জানায়। এতে নতুন করে আশার আলো দেখছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা।