শুক্রবার ৭৯তম স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এটাই ছিল তাঁর প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ১২ তম স্বাধীনতা দিবসের ভাষণ।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এদিন নিজের বক্তব্যে জোর দিয়ে বলেন, “ভারত যদি আত্মনির্ভর না হত, তবে অপারেশন সিঁদুর এত সফল হত না।”
প্রধানমন্ত্রী জানান, ‘আত্মনির্ভর ভারত’ হল ‘বিকশিত ভারত’ গড়ার ভিত্তি। তিনি বলেন, “আমরা যদি আত্মনির্ভর না হতাম, তাহলে এত সফলভাবে অপারেশন সিঁদুর পরিচালনা করা সম্ভব হত না।”
উল্লেখ্য,ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী গত ৭ মে অপারেশন সিঁদুর শুরু করেছিল। এপ্রিলের ২২ তারিখে পহেলগাঁও হামলার সঙ্গে সীমান্তপারের যোগসূত্র পাওয়ার পরে শুরু হয়েছিল অভিযান। এই অভিযানে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে একাধিক জঙ্গি শিবিরে হামলা চালানো হয় এবং ১০০-রও বেশি জঙ্গিকে হত্যা করা হয়।
এরপর পাকিস্তান বড়সড় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালানোর চেষ্টা করে, যা ভারত সফলভাবে প্রতিহত করে। পাল্টা আক্রমণে ভারত পাকিস্তানের বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায়। শেষমেশ ১০ মে উভয় দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হয়।
প্রধানমন্ত্রী মোদি এই অভিযানে অংশ নেওয়া সাহসী সেনাদের প্রশংসা করে বলেন, “আমরা সন্ত্রাসের গডফাদারদের এমন শাস্তি দিয়েছি, যা তারা কল্পনাও করতে পারেনি।” তিনি আরও জানান, ২২ এপ্রিলের ঘটনার পর সেনাদের সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে মুক্তহস্তে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
মোদি বলেন, “অপারেশন সিঁদুরে যা করা হয়েছে, বহু বছর ধরে তা দেখা যায়নি। সীমান্তপারের সন্ত্রাস মোকাবিলায় আমরা এক নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছি।” প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, এই অভিযানের পর পাকিস্তানের ঘুম উড়ে গেছে এবং ভারত ঠিক করেছে, পারমাণবিক হুমকি বরদাস্ত করা হবে না। তিনি স্পষ্ট বার্তা দেন,”আমরা কোনো ব্ল্যাকমেলের ফাঁদে পড়ব না।”
অন্য দেশের উপর নির্ভরশীলতার পরিবর্তে, দেশকে আত্মনির্ভর হতে আহ্বান জানান মোদি, যাতে ভারতের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকে। এদিনের বক্তব্যে, তাঁর বিশেষ জোর ছিল দেশীয় জেট ইঞ্জিন তৈরির উপর, যাতে ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ যুদ্ধবিমান আরও শক্তিশালী হয়।
ভবিষ্যতের স্বপ্ন তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের যুবসমাজের সক্ষমতার উপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে, ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে আমরা একটি বিকশিত দেশে পরিণত করব।”