আর শুধু সময়ের অপেক্ষা, অন্তর্বর্তী সরকারের আবেদন মেনে আর কিছুদিন পরেই বাংলাদেশে ভোটের ঘোষণা করতে পারে সেই দেশের নির্বাচন কমিশন। এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, এবারের ভোটে অংশ নিতে পারবে না দীর্ঘদিন নিরঙ্কুশ ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ।
অন্যদিকে জুলাই আন্দোলনের পর বাংলাদেশে জন্ম হয়েছে বহু রাজনৈতিক দলের। কাজেই এবারের ভোট ঘিরে বাংলাদেশের দিকে নজর থাকবে বিভিন্ন দেশের। এমন পরিস্থিতিতেই উঠে আসছে নানা নির্বাচনী সংস্কারের কথা। এবার ‘না’ ভোট ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব নিয়েই শুরু হয়েছে নানা জল্পনা।
এই ‘না’ বা ‘নো’ ভোট আসলে কী?
ভারতের ভোট ব্যবস্থায় চালু আছে ‘নোটা’। এই বিশেষ ব্যবস্থা হল ‘নান অব দ্য অ্যাবাভ’ – অর্থাৎ ওপরের প্রার্থীদের মধ্যে কেউই নন। অনেকটা এইরকম বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন শুধুমাত্র একক প্রার্থীর আসনে ‘না’ ভোটের সুবিধে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে। ফিরিয়ে আনার কথা বলা হচ্ছে তার কারণ ‘না’ ভোট প্রথম চালু হয়েছিল ফখরুদ্দীন আহমেদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় নবম সংসদ নির্বাচনে। তখন ভোটাররা ব্যালটে ‘কাউকেই চাই না’ ঘরে সিল দিয়ে সব প্রার্থীকে প্রত্যাখ্যান করতে পারতেন। কোনও আসনে যদি অর্ধেক বা তার বেশি ভোট ‘না’ পড়ত, তাহলে ফের নির্বাচন করতে হত। তবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আইন সংশোধন করে এই বিধান তুলে দেয়।
আর তথ্য বলছে ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি ও অন্যান্যরা ভোট বয়কট করায় একশোরও বেশি আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিলেন।এই রকম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় ঠেকাতেই নতুন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।তবে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন শুধুমাত্র একক প্রার্থীর আসনেই ‘না’ ভোটের বিধান ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে।
তবে ভোট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা ভোটের অধিকারকে সংকুচিত করবে এবং ভুয়ো বা ‘ডামি’ প্রার্থী দাঁড় করানোর প্রবণতা বাড়াবে।
কমিশন মনে করছে এই ‘না’ ভোটের ব্যবস্থা প্রার্থীদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়া ঠেকাতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। কিন্তু সমালোচকরা জানাচ্ছেন সবক্ষেত্রেই এই সুবিধে থাকা উচিত। যেমন ভারতে ‘নোটা’র মতো। কোনও আসনে ভোটার যদি কারো প্রতি আস্থা না রাখেন, তবে তাদের ‘না’ ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ থাকা উচিত। নির্বাচনী আইন সর্বত্র সমান হতে হবে বলেই দাবি করছেন সংস্কারপন্থীরা।