রহিম নবি
ডার্বির দিনটা এলেই গোটা বাংলা কার্যত দু’ভাগে ভাগ হয়ে যায়। একদিকে ইস্টবেঙ্গল, অন্যদিকে মোহনবাগান। তবে এবার ডুরান্ড কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে দু’দল মুখোমুখি হওয়ায় ম্যাচের গুরুত্ব খুব স্বাভাবিকভাবেই আরেকটু বেড়ে গিয়েছে। এই ম্যাচ মরশুমের প্রথম পূর্ণশক্তির ডার্বি হতে চলেছে। ফলে, গোটা শহর ডার্বিজ্বরে কাঁপছে। টিকিটের চাহিদা যেমন আকাশছোঁয়া, তেমনিই দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে আরও নানা রকমের পাগলামি দেখা যাচ্ছে এই ডার্বি ঘিরে।
ডার্বি আসলে এমন একটি ম্যাচ যার আগাম ভবিষ্যদ্বাণী করা যায় না। ৯০ মিনিট জুড়ে যে দল বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে খেলতে পারবে, লড়াই করতে পারবে, শেষ হাসি হাসবে তারাই। তাই ডার্বি নিয়ে আগে থেকে কিছু বলা মুশকিল। তবে যদি দলের ভারসাম্যের দিকে তাকানো যায় তা হলে মোহনবাগানকে কিছুটা হলেও এগিয়ে রাখা যেতে পারে। কারণ তারা আগের মরশুমের অধিকাংশ ফুটবলারকেই ধরে রেখেছে। বিদেশি খেলোয়াড়দেরও ধরে রেখেছে তারা। সেই তুলনায় ইস্টবেঙ্গলের দল কিন্তু অনেকটাই নতুন।
যদিও ডার্বি এমন একটি খেলা যেখানে কোনও দলই ওইভাবে এগিয়ে বা পিছিয়ে থাকে না। যেটা মনে রাখতে হবে, ইস্টবেঙ্গল বা মোহনবাগান কোনও দলকেই কিন্তু এখনও পর্যন্ত তেমন জাঁদরেল কোনও প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হতে হয়নি। এ বার তারা পরস্পরের বিরুদ্ধে নামবে। আর দুই দলেই ৪ জন করে বিদেশি থাকছেন। এ ছাড়া দু’দলে যে সমস্ত ভারতীয় ফুটবলাররা আছেন তাঁরাও বেশ ভাল।
এখানে আলাদা করে বলতেই হয় লিস্টন কোলাসোর কথা। চলতি ডুরান্ডে ইতিমধ্যেই ৫ টি গোল করে ফেলেছেন তিনি। অন্যদিকে ইস্টবেঙ্গলের বিপিন সিংও ২ টি গোল করেছেন। সব মিলিয়ে দুই দলের ভারতীয় ফুটবলাররাই কিন্তু বেশ ভাল ফর্মে রয়েছেন এ মুহূর্তে। তাঁদের আত্মবিশ্বাস বেশ ভাল জায়গায় রয়েছে। তাই এ বারই হবে আসল পরীক্ষা।
দুই দলের কেউই এখনও পর্যন্ত বড় কোনও প্রতিপক্ষের সামনে পড়েনি। কাজেই, এ বার ডার্বিতেই বোঝা যাবে কোন দলের কোয়ালিটি বা ক্যালিবার কতটা। এই ম্যাচেই সবটা জলের মতো পরিষ্কার হয়ে যেতে চলেছে। তার ওপর মঞ্চটা কোয়ার্টার ফাইনাল হওয়াও উন্মাদনার মাত্রাটা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে সমর্থকদের মধ্যে। এ বার যে দল বেশি লড়াই করবে জিতবে তারাই।