উপরাষ্ট্রপতি পদে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণণকে বেছে নিয়েছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। ইন্ডিয়া জোট আগেই জানিয়েছিল, তারা এনডিএর উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীকে দেখেই নিজেদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবে। এখন প্রশ্ন হল, রাধাকৃষ্ণণকে উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে বেছে নিয়ে বিজেপি কি মাস্টার্স স্ট্রোক দিল? অনেকেই বলছেন, বিজেপির প্রতি গভীর আনুগত্যের পুরস্কার পেয়েছেন রাধাকৃষ্ণণ।
আবার রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছেন, তামিলনাড়ু-সহ দক্ষিণ ভারতে বিজেপি যখন পায়ের তলায় মাটি খোঁজার চেষ্টা করছে তখন রাধাকৃষ্ণণকে বেছে নিয়ে সেই জায়গাটি মজবুত করল পদ্ম শিবির।
রাধাকৃষ্ণণের নাম সামনে আসতেই ইন্ডিয়া জোটের শরিকরা অনেকেই দ্বিধায় পড়েছে। শিবসেনার উদ্ধব গোষ্ঠী ইতিমধ্যেই রাধাকৃষ্ণণের সমর্থনে মুখ খুলেছে। তামিলনাড়ুর শাসকদল তথা ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম বড় শরিক ডিএমকের মুখপাত্র টিকেএস এলগোভান বলেছেন, রাধাকৃষ্ণণ একজন অন্যতম ভালো প্রার্থী। ডিএমকে কি রাধাকৃষ্ণণকেই ভোট দেবে?
এই প্রশ্নের উত্তরে এলগোভান বলেন, তাঁরা ইন্ডিয়া ব্লকের সদস্য। তাই জোটের শীর্ষ নেতারা যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই তাঁরা মেনে চলবেন। এলগোভান আরও বলেছেন, তামিলনাড়ু দীর্ঘদিন রাষ্ট্রপতি বা উপরাষ্ট্রপতির মতো কোনও বড় সাংবিধানিক পদ পায়নি।
এদিকে রাধাকৃষ্ণণকে প্রার্থী করায় বিরোধী ইন্ডিয়া জোটে ফাটলের সম্ভাবনা দেখছে রাজনৈতিক মহল। কারণ এর আগে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার প্রতিভা পাটিলকে রাষ্ট্রপতি পদের জন্য মনোনয়ন দিয়েছিল। কিন্তু এনডিএ শরিক হওয়া সত্ত্বেও শিবসেনা প্রতিভা পাটিলকেই সমর্থন করেছিল। কারণ প্রতিভা ছিলেন মহারাষ্ট্রের মানুষ। পরবর্তী ক্ষেত্রে এনডিএ শরিক হওয়া সত্ত্বেও শিবসেনা এবং জেডিইউ রাষ্ট্রপতি পদে প্রণব মুখার্জিকে সমর্থন করেছিল। আবার এনডিএ জোটের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী রামনাথ কোবিন্দকে সমর্থন করেছিল জেডিইউ। যদিও সে সময় জেডিইউ ছিল বিরোধী শিবিরে। সদ্য ইস্তফা দেওয়া উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের নির্বাচনের সময় ভোটদানে বিরত ছিল তৃণমূল কংগ্রেস।
শেষ পর্যন্ত রাধাকৃষ্ণণ যদি উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হন তবে তিনি হবেন তামিলনাড়ুর তৃতীয় নেতা যিনি এই পদ পেতে চলেছেন। এখন দেখার রাধাকৃষ্ণণের বিরুদ্ধে ইন্ডিয়া জোট কাকে প্রার্থী করে!