দেশের স্বাধীনতা প্রাপ্তির বছর খানেক আগে ”গ্রেট ক্যালকাটা কিলিংস”-এর ঘটনা ঘিরে হিন্দি ছবি বেঙ্গল ফাইলস। বিরেক অগ্নিহোত্রীর পরিচালনায় তৈরি এই ফিল্মের মুক্তি পাওয়ার কথা আগামী ৫ সেপ্টেম্বর। তবে মুক্তি পাওয়ার আগেই ফিল্মের ট্রেলারটি নিয়ে জোর বিতর্ক গোটা বাংলা জুড়ে। থানায় থানায় এফআইআর- এর বন্যা যেমন বয়েছে, তেমনি মহানগরীতে ট্রেলার প্রদর্শনের সাম্প্রতিক অনুষ্ঠান ঘিরেও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ।
এমন আবহে, বেঙ্গল ফাইলস ফিল্মে গোপাল মুখার্জির চরিত্রটির ভুল উপস্থাপনের অভিযোগ উঠেছে। এবার সরব হয়েছেন তাঁর নাতি শান্তনু মুখার্জি। প্রয়াত দাদুকে ফিল্মের ট্রেলারে কখনও গোপাল পাঁঠা কখনও আবার কসাই অভিহিত করা যথেষ্ট আপত্তিজনক ও অবমাননাকর বলে অভিযোগ তুলেছেন শান্তনু মুখার্জি।
পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীর বিরুদ্ধে থানায় যেমন অভিযোগ দায়ের করেছেন, তেমনি ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে আইনি নোটিসও পাঠিয়েছেন।
১৯৪৬ এর ১৬ অগস্ট ঘটেছিল কুখ্যাত “গ্রেট ক্যালকাটা কিলিংস”। মুসলিম লিগের ডাকা
‘Direct Action Day’ ভারতের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। তৎকালীন কলকাতায় সেই আন্দোলনের জেরে ঘটেছিল অগণিত মৃত্যু। গণহত্যার ৮০ তম বার্ষিকীতে প্রদর্শিত বেঙ্গল ফাইলস- এর ট্রেলার ঘিরেই যাবতীয় বিতর্কের সূত্রপাত।
বেঙ্গল ফাইলস হিন্দি ফিল্মের ট্রেলারে গোপাল মুখার্জির পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে, “এক থা কাসাই গোপাল পাঁঠা”। শান্তনুর দাবি, তাঁর কুস্তিগীর দাদু পেশায় কসাই ছিলেন না,বরং ছিলেন অনুশীলন সমিতির একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। যিনি ১৯৪৬ সালে মুসলিম লিগের দাঙ্গা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছন।
ছবির ট্রেলারে গোপাল পাঁঠাকে “এক থা কাসাই গোপাল পাঁঠা” হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা শান্তনু দাবি করেছেন যে তার দাদা পেশায় কসাই ছিলেন না, বরং একজন কুস্তিগীর এবং অনুশীলন সমিতির একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন, যিনি ১৯৪৬ সালে মুসলিম লীগ দাঙ্গা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
শান্তনু মুখার্জির দাবি, ফিল্মের ট্রেলারে গোপাল মুখার্জি চরিত্রায়ন যেমন ভুলে ভরা, তেমনি তাঁদের কাছে এটি অসম্মানজনকও। তাঁদের গোটা পরিবার এবং এক সম্প্রদায়ের জন্য ক্ষতিকর। বলেছেন, চরিত্রটি উপস্থাপনের আগে আরও গবেষণারও প্রয়োজন ছিল। তাঁদের পরিবারের সঙ্গে এই বিষয়ে পরিচালক কিংবা তাঁর টিম কেউ কোনও যোগাযোগও করেননি বলেও জানিয়েছেন শান্তনু মুখার্জি। আর এসব কারণেই তাঁরা পরিচালকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছেন।
গোপাল মুখার্জির নাতির আরও দাবি, তাঁর দাদু স্বাধীনতা আন্দোলনের অংশ ছিলেন। যাঁর আদর্শ ছিল নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর মতোই। যিনি সেসময়ে বেশ কয়েকজন স্বাধীনতা সংগ্রামীর সঙ্গে একযোগে কাজ করেছেন। “এমন ব্যক্তিত্বকে কেউ কীভাবে বলতে পারেন, যে তিনি কসাই কিংবা পাঁঠা?” প্রশ্ন তুলেছেন শান্তনু।