১৩৪তম ডুরান্ড কাপ ফুটবলে রেকর্ড গড়ল ডায়মন্ড হারবার এফসি। প্রথমবার টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে পৌঁছে গেল ট্রফি জয়ের লড়াইয়ে। বুধবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ইস্টবেঙ্গলকে ২-১ গোলে হারিয়েছে নবাগত ডায়মন্ড হারবার। জয়ী দলের হয়ে গোল দুটি করেছেন মিকেল কোর্তাজার এবং জবি জস্টিন। ইস্টবেঙ্গলের গোলদাতা আনোয়ার আলি। ডুরান্ড ফাইনালে ডায়মন্ড হারবারের প্রতিপক্ষ গতবারের চ্যাম্পিয়ন নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড।
যুবভারতীতে বুধবার ডুরান্ডের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল ও ডায়মন্ড হারবার। অস্কার ব্রুঁজোর তারকা ফুটবলাররা এদিন ছন্দ হারায় কিবু ভিকুনার উজ্জীবিত ফুটবলারদের কাছে। আই লিগের দলটি সমানে সমানে টক্কর দিয়ে আরও একটা অবাক করা জয় ছিনিয়ে নিয়েছে আইএসএল-এ খেলা ক্লাবের কাছ থেকে। অন্যদিকে ডার্বি জেতার পরের ম্যাচে হারার কুখ্যাত ”রেকর্ড” ধরে রেখেছে ইস্টবেঙ্গল।
দুই অর্ধ মিলিয়ে ডায়মন্ড হারবার ম্যাচে অসংখ্য সুযোগ নষ্ট করেছেন ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলাররা। দলের হেড কোচ অস্কার ব্রুজোঁ ছেলেদের আত্মতুষ্টিতে না ভোগার কথা আগাম জানিয়েছিলেন। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের এদিনের খেলায় তার কোনও ছাপই পড়েনি। বরং নবাগত প্রতিপক্ষকে একটু হালকা চালে পরখ করতে গিয়ে ম্যাচটাই খুইয়েছে। ১-২ গোলে পিছিয়ে পড়েও ম্যাচে ফেরা আর সম্ভব হয়নি ধারে ও ভারে এগিয়ে থাকা ইস্টবেঙ্গলের।
ইস্টবেঙ্গলের উপর্যুপরি আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছিল ডায়মন্ড হারবার এফসি রক্ষণ। সামাল দিতে জোড়া পরিবর্তন করেন পোলিশ কোচ কিবু ভিকুনা। তারপরই পাল্টা আক্রমণে আসে গোল। খেলার ৬৬ মিনিটের মাথায় অসাধারণ ব্যাকভলিতে গোল করেন মিকেল। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় কিবু ভিকুনার দল।
তবে এই লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি ডুরান্ডের নবাগত দলটি। গোল হজম করার মিনিট খানেকের মধ্যেই, দুরন্ত কামব্যাক ইস্টবেঙ্গলের। মাঝমাঠ থেকে দূরপাল্লার জোরাল শটে গোল করেন আনোয়ার আলি। সমতা ফেরায় হাঁফ ছেড়েছিল যুবভারতীর ইস্টবেঙ্গল গ্যালারি।
সমতা ফিরতেই দ্বিতীয় গোল পেতে মরিয়া ইস্টবেঙ্গল একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে। ৭২ মিনিটে ক্রেসপোর পরিবর্তে মাঠে নামেন রশিদ। বাবার মৃত্যুতে দেশে ফিরে গিয়েছিলেন তিনি। তাই কলকাতা ডার্বিতে খেলতে পারেননি। বুধ সকালে শহরে ফিরেই মাঠে নেমে পড়েন রশিদ। রশিদকে পেয়ে আক্রমণে আরও ঝড় তোলে ইস্টবেঙ্গল। ৭৯ মিনিটে লেফট উইং থেকে মিগুয়েলের ধনুকের মতো বাঁক খাওয়ানো শট বারে লেগে ফিরে আসে। নজরকাড়া ফুটবল খেলেছেন ডায়মন্ড হারবারের গোলরক্ষক মিরশাদ মিচু।
ম্যাচের রং আমূল বদলে যায় এর কিছু পরেই। কাউন্টার অ্যাটাকে এসে কর্নার আদায় করে ডায়মন্ড হারবার। ম্যাচের ৮৩ মিনিটে কর্নার থেকেই জটলার মধ্যে গোল করেন ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তনী জবি জস্টিন। অধিনায়কের গোলে ২-১ এগিয়ে যায় কিবু ভিকুনার ডায়মন্ড হারবার। বাকি সময় এবং ইনজুরি টাইমের ৮ মিনিটেও ম্যাচে সমতা ফেরাতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। ফলে রেফারির লম্বা বাঁশি শেষমেষ যেন নিভিয়ে দিয়েছে, সদস্য-সমর্থকদের বুকের ভেতরে ধরে রাখা জ্বলন্ত মশালকে।
ইস্টবেঙ্গল
প্রভসুখন গিল (গোলরক্ষক), আনোয়ার, লালচুংনুংগা (প্রভাত লাকরা, ডেভিড), সিবিয়ে, রাকিপ, ফেরেইরা, এডমুন্ড(জিকসন সিং), মহেশ, ক্রেসপো(রশিদ), বিপিন(বিষ্ণু), দিয়ামানতাকোস
ডায়মন্ড হারবার
মির্শাদ(গোলরক্ষক), কোর্তাজার, রবিলাল, রুতকিমা(মেলোরি), লিয়ানসাঙ্গা, পল(বিক্রমজিত), জস্টিন(অধিনায়ক), অজিত কুমার, স্যামুয়েল(অঙ্গুসানা), হোলিচরণ (খোসলা), মাজসেন
