পরিবেশে কর্মী তথা শিক্ষাবিদ সোনম ওয়াংচুকের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিমালয়ান ইনস্টিটিউট অফ অলটারনেটিভ লার্নিংকে দেওয়া জমি ফিরিয়ে নিল লাদাখ প্রশাসন। হিমালয়ান ইনস্টিটিউট অফ অলটারনেটিভ লার্নিং বা এইচআইএএলকে একটি জমি ৪০ বছরের লিজ দিয়েছিল প্রশাসন৷ সেই লিজ বাতিল করল লাদাখ প্রশাসন। এই প্রশাসনিক নির্দেশের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে লাদাখবাসী।
লাদাখকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া-সহ একধিক দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করছেন সোনম। ২০২৪-এর অক্টোবরে দাবি আদায়ে অনশন আন্দোলন করেন জলবায়ু আন্দোলনকর্মী, বিজ্ঞানী এবং বিকল্প শিক্ষার দিশারী সোনম। মনে করা হচ্ছে, সেই কারণে নেমে এল শাস্তির খাঁড়া। কেড়ে নেওয়া হল বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিমালয়ান ইনস্টিটিউট অফ অলটারনেটিভ লার্নিং-এর জমি।
লাদাখের বাসিন্দাদের অভিযোগ, ন্যায্য দাবি আদায়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার কারণেই এই কোপ। আসলে প্রশাসন মুখ বন্ধ করানোর চেষ্টা করছে।
২০১৮ সালে সরকারি প্রক্রিয়া মেনে এইচআইএএলকে ৪০ বছরের জন্য ৫৪ হেক্টর জমি বরাদ্দ করা হয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার এক নির্দেশে ওই বরাদ্দ বাতিল করেছেন লে-র ডেপুটি কমিশনার।
কিন্তু প্রশ্ন হল, কেন সরকারের বরাদ্দ জমি ফিরিয়ে নেওয়া হল?
প্রশাসনের দাবি,যে কারণ দেখিয়ে এইচআইএএল জমি নিয়েছিল সেটা তারা পূর্ণ করেনি। ওই জমিতে এখনও পর্যন্ত কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তাই ওই জমি থেকে সোনমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় সামগ্রী অবিলম্বে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।
প্রশাসনের এই নির্দেশের সমালোচনা করেছেন সোনাম।
তিনি বলেছেন, “এটা সোনম ওয়াংচুকের উপর আক্রমণ নয়, লাদাখের উপর আক্রমণ। এই আক্রমণ লেহ অ্যাপেক্স বডি এবং কার্গিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের উপর আক্রমণ।” লে-র বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠনের সমন্বয়ে তৈরি লেহ অ্যাপেক্স বডি জানিয়েছে, বরাদ্দ জমি কেড়ে নিয়ে মানুষকে হেনস্থা ও অসম্মান করা হচ্ছে। ভয় দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে। লাদাখের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করতেই এই সিদ্ধান্ত।
লাদাখকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া সংক্রান্ত একাধিক দাবি আদায়ে ২০২৪-এর ৬ অক্টোবর থেকে দিল্লির লাদাখ ভবনের সামনে অনশনে বসেছিলেন সোনম। সে সময় অনশনস্থল থেকে সোনম ও তাঁর সঙ্গীদের থানায় তুলে নিয়ে যায় দিল্লি পুলিশ। তবু পিছু হঠেননি সোনমরা। অনশনও ভাঙেননি তিনি। অনশন কর্মসূচি ১৫ দিন চলার পর সোনমদের সঙ্গে দেখা করেন জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখের জয়েন্ট সেক্রেটারি প্রশান্ত লোখাণ্ডে। তাঁদের আশ্বাস পেয়ে দিল্লিতে তাঁর অবস্থান বিক্ষোভ তুলে নেন জলবায়ু আন্দোলনকর্মী সোনম ওয়াংচুক। প্রশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলণের কারণেই সোনমের প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া জমি কেড়ে নেওয়া হল বলে মনে করা হচ্ছে।