শেখ হাসিনা জমানার পতন হতেই কাছাকাছি এসেছে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে থাকা বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। এই নতুন সম্পর্কের সুত্র ধরেই শনিবার ঢাকায় এসে দু’দিনের সফরে যোগ দেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী তথা বিদেশমন্ত্রী ইসহাক দার। ২০১২ সালের পর এটাই ইসলামাবাদ থেকে ঢাকায় আসা সর্বোচ্চ পর্যায়ের সফর। রবিবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র বা বিদেশ উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেন ইসহাক দার।
এই বৈঠকের পর এম তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ইসহাক দারের দেওয়া বিবৃতি সরাসরি উড়িয়ে দিয়েছেন। পাকিস্তানের তরফে বিদেশমন্ত্রী ইসহাক দার দাবি করেছিলেন, একাত্তর ইস্যুতে পাকিস্তানের ভূমিকায় ক্ষমা চাওয়া-সহ যাবতীয় সমস্যার সমাধান, এক বার নয়, দু’বার করা হয়ে গিয়েছে। প্রথমবার ১৯৭৪ সালে নয়াদিল্লিতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে, দ্বিতীয়বার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশারফের ঢাকা সফরে, যখন তিনি গণহত্যা প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছিলেন।
এম তৌহিদ হোসেন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে ইসহাক দারের দাবি সঠিক নয়। তিনি বলেন, “এমন হলে সমস্যাগুলি আগেই সমাধান হয়ে যেত। আমরা আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছি, ওরা তাঁদেরটা করেছেন। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়গুলি নিয়ে সামনে এগনো হবে।”
এম তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, আলোচনায় ঢাকা তিনটি মূল বিষয় তোলে। তার মধ্যে ছিল স্বাধীনতার আগের আর্থিক ইস্যুগুলির নিষ্পত্তি, পাকিস্তানে আটকে পড়া নাগরিকদের প্রত্যাবর্তন এবং ১৯৭১ সালে সংঘটিত গণহত্যার জন্য পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিক দুঃখপ্রকাশ ও ক্ষমা।
যদিও পাক মন্ত্রীর কথায় ‘এই চ্যাপ্টার ইতিমধ্যেই ক্লোজড’ হয়ে গেছে। পরিস্থিতিতে কিছুটা ক্ষুণ্ণ হয়ে বিরক্ত দার বলেই দেন যে বাংলাদেশের মানুষের উচিত দিল সাফ বা মন পরিষ্কার করা। তবে এই ইস্যু নিয়ে জটিলতা তৈরি হলেও কথা ঘুরিয়ে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান দুই দেশের জনগণের মিলিতভাবে কাজ করার ‘অসীম সম্ভাবনা’ রয়েছে বলে জানিয়ে দেন পাক বিদেশমন্ত্রী।