বলিউডের স্বর্ণ যুগ শুধু আইকনিক সিনেমা আর অবিস্মরণীয় গানের জন্যই নয়, বরং অফস্ক্রিনে তারকাদের কিংবদন্তি বন্ধুত্বের জন্যও স্মরণীয়। তেমনই এক নজির ছিলেন দিলীপ কুমার ও রাজ কাপুর। তাঁদের সম্পর্ক শুধু নিছক বন্ধুত্ব নয়, ছিল ভাইয়ের মতো ভালোবাসায় ঘেরা।
গত বছর ডিসেম্বর মাসে রাজ কাপুরের ৯৯তম জন্মবার্ষিকীতে সায়রা বানু এই অমূল্য স্মৃতিগুলো শেয়ার করেছিলেন। তিনি জানান, তাঁদের বিয়ের দিনে একটি খুনসুটি ভরা প্রতিশ্রুতি রাখতে রাজ কাপুর হাঁটু গেড়ে হাজির হয়েছিলেন তাঁর সামনে।
সায়রা বানু বলেন, “অনেকে জানেন না, দিলীপ সাহেব তখনও অবিবাহিত ছিলেন। সেই সময় রাজজি প্রায়ই মজা করে বলতেন, ‘শাদি কিউঁ নেহি করতা? যেদিন তুই বিয়ে করবি, আমি হাঁটু গেড়ে চলে আসব।’ আর সত্যিই দিলীপ সাহেব আর আমি বিয়ে করার দিন তিনি সেই প্রতিশ্রুতি রাখলেন। হাঁটু গেড়ে এসে হাসতে হাসতে বললেন, ‘আমি তোকে বলিনি! আজ হাঁটু গেড়ে এলাম, তুই বিয়ে করেছিস বলে ধন্যবাদ।’”
সায়রার ইনস্টাগ্রাম পোস্টে তাঁদের একসঙ্গে তোলা পুরনো কিছু ছবিও ছিল। সেখানে দেখা যায় দিলীপ কুমার ও রাজ কাপুর সাদা পোশাকে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছেন, কোথাও আবার একসঙ্গে আড্ডা দিচ্ছেন, হাসছেন। এই ছবিগুলো প্রমাণ করে, তাদের বন্ধুত্ব কতটা গভীর ও আন্তরিক ছিল।
বন্ধুত্ব শুধু হাসি-ঠাট্টার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। কঠিন সময়েও দু’জন দু’জনের জন্য ছুটে এসেছেন। সায়রা বানু আরও জানান, রাজ কাপুর যখন হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হন, তখন দিলীপ কুমার বিদেশে ছিলেন। খবর পেয়েই তিনি তড়িঘড়ি দিল্লিতে ফিরে আসেন এবং অ্যাপোলো হাসপাতালে রাজ কাপুরকে দেখতে যান।
অচেতন অবস্থায় বন্ধুর পাশে দাঁড়িয়ে দিলীপ কুমার আবেগে ভেসে বলেছিলেন, “রাজ, জাগো! আমি চপলি কাবাবের খুশবু এনেছি। চল, আগের মতো বাজারে হাঁটি, কাবাব আর রুটি খাই। একেবারে নাটক বন্ধ করো, আমাকে নিয়ে চলো পেশাওয়ারের উঠোনে।” কথাগুলো বলতে বলতে তাঁর চোখে অশ্রু নেমে এসেছিল।
সায়রা বানু লিখেছিলেন, “দিলীপ সাহেব আর রাজজি শেষ দিন পর্যন্ত একে অপরের সঙ্গী ছিলেন। তাঁদের সম্পর্ককে শুধু বন্ধুত্ব বললে ছোট করে বলা হবে, এটা ছিল সত্যিই ভাইয়ের মতো ভালোবাসা।”
রাজ কাপুরের জন্মবার্ষিকীতে আবেগভরা বার্তায় তিনি লেখেন,“ভালোবাসা ও শ্রদ্ধায় আজও রাজজিকে মনে করি। শুভ জন্মদিন রাজ কাপুর।”