ফের ‘সব ব্যাদে আছে’ তত্ত্বের রমরমা৷ একসময় বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহা যা কিছু আধুনিক বিজ্ঞানের আবিস্কার তার সকিছুকেই বেদে আছে বলে দাগিয়ে দেওয়ার কড়া সমালোচনা করেছিলেন।তবে সেই সবই ব্যাদে থাকার ট্র্যাডিশনটা আজও যায় নি। এক সর্ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী ভোপালের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স, এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ-এ বক্তব্য রাখতে গিয়ে শিবরাজ সিং চৌহান জানিয়েছেন যে প্রাচীন ভারতেই উন্নত প্রযুক্তি বিদ্যমান ছিল। হিন্দু মহাকাব্যে বর্ণিত ‘পুষ্পক বিমানের’ উল্লেখ করে দাবি করেন, “রাইট ভ্রাতৃদ্বয়ের বিমানের বহু আগে আমাদের কাছে পুষ্পক বিমান ছিল। আজকের ড্রোন আর মিসাইল আমাদের হাজার হাজার বছর আগেই ছিল। মহাভারতে আমরা সবই পড়েছি। আমাদের দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি হাজার বছর আগে থেকেই বিকশিত ছিল।”
যদিও বিশ্বের যেকোনও জিকে বইতেই প্রথম বিমানের আবিষ্কারক হিসেবে মার্কিন উদ্ভাবক অরভিল ও উইলবার রাইটের নাম লেখা আছে। ১৯০৩ সালে উত্তর ক্যারোলিনার কিটি হক শহরে সফল উড়ানকেই আধুনিক বিমান চলাচলের সূচনা বলে ধরা হয়।
যদিও সে যুক্তি মানতে নারাজ আজকের পুরাণ, বেদ, মহাকাব্যের মধ্যে বিজ্ঞান খোঁজা মানুষজন।যেমন অল্প কয়েক দিন আগেই হিমাচল প্রদেশে ‘জাতীয় মহাকাশ দিবস’-এ স্কুল ছাত্রদের উদ্দেশে প্রাক্তন মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর প্রশ্ন করেছিলেন যে মহাকাশে ভ্রমণকারী প্রথম ব্যক্তি কে ছিলেন? এর উত্তরে ছাত্ররা নীল আর্মস্ট্রং –এর নাম করলেও সাংসদ বলেন হনুমানজির কথা।
যুক্তিকে বইয়ের পাতায় বন্দি রেখে রাজনৈতিক নেতাদের এইভাবে প্রাচীন ধর্মগ্রন্থকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরার কড়া সমালোচনা শুরু হয়েছে দেশজুড়ে। ডিএমকে সাংসদ কানিমোঝি এক্স-এ লিখেছেন, “একজন সংসদ সদস্য ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্কুলের শিশুদের বলছেন যে নীল আর্মস্ট্রং নয়, হনুমান প্রথম চাঁদে গিয়েছিলেন – এটি ভীষণ উদ্বেগজনক। বিজ্ঞান কখনও পুরাণ নয়। তরুণ প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করা জ্ঞান, যুক্তি এবং আমাদের সংবিধানে নিহিত বৈজ্ঞানিক মনোভাবের প্রতি অপমান।”
Leave a comment
Leave a comment