তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র ফের এক বড় রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে উদ্দেশ করে বিস্ফোরক মন্তব্য করে। তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ রুখতে ব্যর্থ হয়েছেন অমিত শাহ। তীব্র আক্রমণ করে তিনি বলেন, “ওনার মাথা কেটে টেবিলে রাখা উচিত।”
ঘটনার পর বিজেপি পাল্টা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলে, মহুয়া মৈত্রর মন্তব্য “অশোভন ও ঘৃণাত্মক”। তারা প্রশ্ন তোলে, এটাই কি তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারি অবস্থান?
বৃহস্পতিবার নদিয়ার কৃষ্ণনগরে এক অনুষ্ঠানের ফাঁকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মহুয়া অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকার সীমান্ত সুরক্ষায় দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, “ভারতের সীমান্ত পাঁচটি বাহিনী দ্বারা রক্ষিত হয়। আর সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সরাসরি দায়িত্ব।”
মহুয়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির স্বাধীনতা দিবসের ভাষণ প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “লালকেল্লা থেকে প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন অনুপ্রবেশকারীরা দেশের জনবিন্যাসের কাঠামো বদলে দিচ্ছে। অথচ তিনি যখন বলছিলেন, তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সামনের সারিতে বসে হাততালি দিচ্ছিলেন।”
এরপরেই তিনি অমিত শাহকে কটাক্ষ করে বলেন, “যদি সীমান্তে কেউ পাহারা না দেয়, প্রতিদিন বিদেশি অনুপ্রবেশ ঘটে, আমাদের নাগরিকরা অভিযোগ করে অনুপ্রবেশকারীরা আমাদের মেয়েদের দিকে নজর দিচ্ছে, জমি দখল করছে, তাহলে প্রথম কাজ হওয়া উচিত অমিত শাহর মাথা কেটে টেবিলে রাখা।”
কৃষ্ণনগরের সাংসদ আরও বলেন, “যখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মন্ত্রক সীমান্ত রক্ষা করতে ব্যর্থ, আর প্রধানমন্ত্রী নিজে অনুপ্রবেশের সমস্যা স্বীকার করেন, তখন দোষ কার? আমাদের, নাকি কেন্দ্রের? সীমান্তে বিএসএফ মোতায়েন থাকা সত্ত্বেও অনুপ্রবেশ কেন বন্ধ হচ্ছে না?”
এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। বিজেপি কৃষ্ণনগরের কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। বিজেপি নেতারা মহুয়ার মন্তব্যকে “গভীরভাবে অশোভনীয়” এবং “গণতান্ত্রিক পরিসরের জন্য অপমানজনক” বলে ব্যাখ্যা করেছেন। বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, “এ ধরনের মন্তব্য কেবল ব্যক্তির মানসিকতার পরিচয় দেয়, এবং তৃণমূলের চরিত্রও প্রকাশ করে। আমরা জানতে চাই, এটা কি তৃণমূলের সরকারি লাইন? যদি না হয়, তবে দলকে ক্ষমা চাইতে হবে এবং মহুয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।”
যদিও মহুয়া মৈত্র নিজে বা তৃণমূল কংগ্রেস এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।