সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনের ফাঁকে ১০ মাস পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠকে ভারত-চিন সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার দারুণ বার্তা উঠে এসেছে। ট্রাম্পের শুল্কনীতির টানাপোড়েনের প্রেক্ষাপটে নতুন করে ভারত-চিন সুসম্পর্ক আমেরিকার চিন্তার কারণ হয়ে উঠতে চলেছে। বেজিংয়ের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠতা আমেরিকার বিদেশনীতির জন্য সতর্কবার্তা হয়ে উঠেছে।
সার্বিকভাবে, এই বৈঠক শুধু সীমান্ত নয়, আঞ্চলিক ও বিশ্ব কূটনীতিতে ভারত-চিনের পারস্পরিক সহযোগিতার নতুন সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তিয়ানজিন এসসিও বৈঠকের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো হল-
ভারত-চিন সম্পর্কে অগ্রগতি – রাশিয়ার কাজান বৈঠকের পর ফের তিয়ানজিন। এই দুই বৈঠক থেকে দুই দেশের সম্পর্কে যে অগ্রগতি হয়েছে, মোদি ও শি উভয়েই তাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁরা স্পষ্ট করেছেন, ভারত ও চিন প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, বরং অংশীদার।
সরাসরি বিমান পরিষেবা – প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন যে ভারত ও চিনের মধ্যে সরাসরি বিমান পরিষেবা ফের চালু হবে। কোভিড মহামারির সময় থেকে এই পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। তবে কবে সেই পরিষেবা চালু হবে তার তারিখ ঘোষণা হয়নি।
কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রা ও ভিসা – মোদি এই বৈঠকে কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রা ও পর্যটক ভিসা পুনরায় চালুর প্রসঙ্গ তোলেন। মহামারির পর দুই দেশের মধ্যে এবার তা ধাপে ধাপে স্বাভাবিক হচ্ছে।
গালওয়ান পরবর্তী শান্তি পরিস্থিতি – এই বৈঠকে দুই প্রধান একমত হয়েছেন যে, ভারত-চিন সম্পর্ককে অন্য কোনও দেশের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা উচিত নয়। আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয়ে যৌথ অবস্থান জোরদার করা দরকার। ২০২০ সালের গালওয়ান সংঘর্ষের পর সম্পর্কের টানাপোড়েন কাটিয়ে উভয় দেশই সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পরিবেশ সৃষ্টির কথা উল্লেখ করেন।
সীমান্ত ইস্যুতে সংযম ও বন্ধুত্বের বার্তা – শি জিনপিং জানিয়েছেন ভারত ও চিন পরস্পরের বন্ধু ও সুসম্পর্কের প্রতিবেশী। তিনি জানান, দুই দেশ গ্লোবাল সাউথের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য, তাই নাগরিকদের কল্যাণে ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। পাশাপাশি জিনপিং জোর দিয়ে বলেন, সীমান্ত ইস্যুকে দীর্ঘমেয়াদি ও কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গিতে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়া দরকার।
বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত – দুই দেশ সীমান্ত বাণিজ্য ফের শুরু করতে সম্মত হয়েছে। ভারতকে দুর্লভ খনিজ, সার ও টানেল বোরিং মেশিন সরবরাহের আশ্বাস দিয়েছে চিন। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত হলে ভারতের ইভি খাতে চিনা বিনিয়োগের সুযোগ বাড়বে, অন্যদিকে ভারতের বাজারে প্রবেশাধিকার বাড়লে চিনের অর্থনীতিও লাভবান হবে।