গত দুদিন ধরে প্রবল বৃষ্টি চলছে হিমাচল প্রদেশের শিমলা-সহ কয়েকটি জেলায়। একটানা বৃষ্টি ও ধস নামার কারণে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। খোঁজ মিলছে না এক মহিলার। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন ৩৫ বছরের এক ব্যক্তি এবং তাঁর কন্যা।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যা থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত শিমলায় ১১৫.৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। প্রবল বৃষ্টিপাতের জেরে শিমলায় ভেঙে পড়েছে একাধিক বাড়ি, নেমেছে ভূমিধস। এলাকায় দুদিনের জন্য জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। বন্ধ হয়ে গিয়েছে পাঁচটি জাতীয় সড়ক। শিমলা-কালকা রুটে বাতিল হয়েছে ৬টি ট্রেন।
রবিবারের পরও সোমবারও বৃষ্টি কমার কোনও লক্ষণ নেই। স্থানীয় আবহাওয়া দফতরও কোনও আশার খবর শোনাতে পারেনি। সোমবার আবহাওয়া দফতর তার পূর্বভাসে জানিয়েছে, শিমলা-সহ রাজ্যের ৬টি জেলায় মঙ্গলবার পর্যন্ত ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হবে। জরুরি কোনও প্রয়োজন ছাড়া মানুষকে ঘরের বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় মঙ্গলবার পর্যন্ত লাল সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর।
জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, অতিভারী বৃষ্টির কারণে শিমলা শহর সংলগ্ন ডাবলুতে রবিবার রাতে বাড়ি ভেঙে বীরেন্দ্র কুমার এবং তাঁর ১০ বছরের মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। বীরেন্দ্রর স্ত্রী বাড়ির বাইরে থাকায় তিনি প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন। সোমবার সকালে চোল গ্রামে বাড়ি চাপা পড়ে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। বছর পঁয়ষট্টির ওই মহিলার নাম কলাবতী। অন্যদিকে দয়ালমোড়ি গ্রামে ১০ জনকে উদ্ধার করা হলেও এক মহিলার কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। ওই মহিলাকে উদ্ধারের জন্য চলছে তল্লাশি। প্রবল বৃষ্টির কারণে স্থানীয় নদীগুলি ফুঁসছে। তাই নদী সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের ইতিমধ্যেই নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তৈরি রাখা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে।
জানা গিয়েছে, একটানা প্রবল বৃষ্টির কারণে শিমলায় একটি সরকারি স্কুল ভেঙে পড়েছে। উপড়ে গিয়েছে একাধিক গাছ। বেশিরভাগ জায়গায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় জল সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে।
প্রবল বৃষ্টিতে সোলান জেলার অবস্থাও খুব খারাপ। একটানা প্রবল বৃষ্টির কারণে রাজ্যের পাঁচটি জাতীয় সড়ক বন্ধ রাখা হয়েছে। শিমলা- কালকা শাখায় বাতিল হয়েছে একাধিক ট্রেন। হিমাচল প্রদেশ সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, চলতি বর্ষার মরসুমে সে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৯১ টি হড়পা বান ৪৫টি মেঘ ভাঙা বৃষ্টি এবং ৯৫টি বড় ধরনের ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে।
বৃষ্টি বন্যা ও ধসের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন ৩২০ জন। সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বাড়ি। নষ্ট হয়েছে বিপুল পরিমাণ ফসল। সবমিলিয়ে হিমাচল প্রদেশে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা।