গোটা বিশ্বের উপর মর্জিমাফিক শুল্ক চাপিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে সঠিক পথে হাঁটছেন না তা সম্ভবত তিনি নিজে ও তাঁর অতি অনুরাগীরা ছাড়া সকলেই বুঝতে পারছেন। ইতিমধ্যেই শুল্ক ইস্যুতে তাঁর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে বিরোধী ডেমোক্র্যাট শিবির। কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে বিদেশি পণ্যের ওপর ব্যাপক কর আরোপ করাটাকে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার সীমার অপব্যবহার বলে আদালতের রায়ে বলা হয়েছে। এবার গোটা সমস্যাকে ট্রাম্পের নিজের তৈরি বিপর্যয় বলে ব্যাখ্যা করলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ পল ক্রুগম্যান।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের শুল্ক আরোপের এই সিদ্ধান্তকে গত শুক্রবারই বেআইনি বলে জানিয়ে দিয়েছে আমেরিকার ফেডারেল সার্কিটের আপিল আদালত। জানানো হয়েছে, এ ভাবে শুল্ক আরোপ করা যায় না। আদালত জানায়, জাতীয় জরুরি অবস্থার অজুহাতে প্রায় সব দেশের ওপর আমদানি কর চাপিয়ে ট্রাম্প সীমা অতিক্রম করেছেন। আদালতের এমন রায়ের প্রেক্ষিতেই ২০০৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত ক্রুগম্যান এক ব্লগপোস্টে লিখেছেন, “এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ট্রাম্প একেবারে নিজের তৈরি বিপর্যয়ের মুখোমুখি। রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যানদের ভোট পেতে পারতেন, কিন্তু তিনি অস্থির এবং সঙ্গে সঙ্গেই একনায়কের মতো শাসন শুরু করতে চেয়েছেন।”
ট্রাম্প একটি তথাকথিত ‘অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করে কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই শুল্ক আরোপ করে বসেছেন, যা আইনবিরুদ্ধ। অন্যদিকে ট্রাম্পের এই হঠাৎ শুল্ক আরোপ বিশ্ব বাজারকে নাড়িয়ে দিয়েছে, আমেরিকার বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক তলানিতে নিয়ে গেছে। পাশাপাশি তা মুদ্রাস্ফীতি ও বৃদ্ধি হ্রাসের আশঙ্কা বাড়িয়েছে।
পল ক্রুগম্যান জানিয়েছেন, ট্রাম্প নিজেই তার আইনি যুক্তি দুর্বল করেছেন। একদিকে তিনি বলছেন, মার্কিন অর্থনীতি দুর্দান্ত অবস্থায় আছে আর অন্যদিকে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে শুল্ক আরোপের সাফাই দিচ্ছেন। তাঁর প্রশ্ন, “অর্থনীতি যদি চমৎকার হয়, তবে আবার জরুরি অবস্থা কেন?”