তাঁর শরীর ও পোশাক নিয়ে ট্রোলকারীদের ‘ধুয়ে’ দিলেন অনুষ্কা শঙ্কর। আর পাঁচটা সেলিব্রিটির মতো তিনিও সমাজ মাধ্যমে নিজের একাধিক ছবি মাঝে মধ্যেই পোস্ট করেন। আর সেগুলিতে নেট নাগরিকদের একাংশ কখনও কটাক্ষ, কখনও আবার তির্যক মন্তব্য জুড়ে দেন। একধাপ এগিয়ে কেউ আবার তাঁরা বাবা, পণ্ডিত রবিশঙ্করকে টেনে, অযাচিত উপদেশও জুড়ে দিয়েছেন।
সেতার বাদক-সুরকার অনুষ্কা শঙ্করের সাম্প্রতিক ইনস্ট্রাগ্রাম পোস্ট সেই সবেরই জোরাল প্রতিবাদ। তাঁর এমন দীর্ঘ পোস্ট সাহস জুগিয়েছে বডি সেমিং-এ শিকার হওয়া ভুক্তভোগীদের। ইনস্টা পোস্টে তাঁর স্পষ্ট বার্তা, “শরীরটা আমার। অন্য কারও মন্তব্য করার জন্য নয়।”
নিজের শরীরটাকে সঙ্গে নিয়েই প্রায় ৪৪টা বছর কাটিয়ে ফেলেছেন পণ্ডিত রবিশঙ্করের কন্যা অনুষ্কা। তাঁর সেই দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার নানা ধাপও তুলে ধরেছেন পোস্টে। লিখেছেন, “এক অর্থে body মানে শুধু একটি শরীর, যা প্রত্যেকেরই আছে! তাই বিশেষ কিছু নয়। অন্য অর্থে, Everybody মানে প্রত্যেকের শরীরের মতো!। তাই এটি কিন্তু এক অলৌকিক ঘটনা। যখন আমি ভাবি, আমার এই শরীর আমাকে কীসের কীসের মধ্য দিয়ে নিয়ে গেছে, তখন বিস্ময় এবং কৃতজ্ঞতায় ভরে যাই”।
১১ বারের গ্র্যামি মনোনীত সেতারশিল্পী, তাঁর দীর্ঘ পোস্টে ছোট থেকে বড় হয়ে ওঠার চ্যালেঞ্জগুলিও সমাজমাধ্যমে ভাগ করে নিয়েছেন। লিখেছেন, “এই শরীরই ২টি সন্তানের জন্ম দিয়েছে। ছোটবেলায় যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। পরে পুরুষদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বিপজ্জনক পরিস্থিতিতেও বেঁচে ফিরেছে। ৪ টি বড় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সুস্থ হয়েছে। ১১ বছর বয়স থেকে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমের জন্য ঋতুস্রাবের তীব্র ব্যথায় কাতর হয়েছে।”
তিনি আরও লেখেন, ”মাইগ্রেনের সঙ্গেও ভুগছে। আবার অজ্ঞাত নিউরোডাইভারজেন্স এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্ত বিভ্রান্তি, চাপ এবং ক্লান্তির সঙ্গে লড়তে হয়েছে। একবার অটো ইমিউন ডিসঅর্ডারের সঙ্গে লড়তে হয়েছে। আর প্রায় সবগুলি লড়াইতে খারাপ যোদ্ধা বলে শরীরটা বেশি করে ভুগেছে।”
বিশিষ্ট সেতারবাদক ও সুরকারের উপলব্ধি, যাঁরা অন্যের শরীর নিয়ে কটু মন্তব্য করেন, তাঁদেরই লজ্জা হওয়া উচিত। ইনস্টা পোস্টে অনুষ্কা আরও লেখেন, ”এটা ২০২৫ সালে, সমাজের এই ধরনের বোকামির অনেক ঊর্ধ্বে থাকা উচিত”।
ট্রোল-এর শিকার তথা ভুক্তভোগীদের উদ্দেশেও সংহতির বার্তা দিয়েছেন অনুষ্কা। লিখেছেন, “যে কেউ এখন এই ধরনের অপমানজনক মন্তব্যের শিকার। আর সেটা প্রকাশ্যেই বা গোপনে হোক। আমি কিন্তু তোমাকে দেখতে পাই এবং আমি তোমার সঙ্গে আছি। এটা(শরীর) বহন করা তোমার লজ্জা নয়, এটা যার ট্রোল করে তাদেরই লজ্জা।”