২০২৫-এর শেষ নাগাদ দিল্লির সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করতে আলোচনা জোরদার করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। আগামী এক মাসের মধ্যেই দু-দফা গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। জানা যাচ্ছে, এ সপ্তাহেই দিল্লিতে পৌঁছবেন ইউরোপীয় প্রতিনিধিদল। বাণিজ্য বাধা দূর করার পাশাপাশি কৌশলগত ও প্রতিরক্ষা সম্পর্ক জোরদার করাই আলোচনার মূল লক্ষ্য বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদF এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন চলতি বছরের মধ্যে ভারত-ইইউ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) চূড়ান্ত করার লক্ষ্যকে সমর্থন করেছেন।
তবে ট্রাম্পের ট্যারিফ নীতির জেরে এই চুক্তি ঘিরেই আশঙ্কার কালো মেঘ দেখছিল দিল্লি। কারণ, ভারতের রাশিয়া থেকে তেল কেনা ইউক্রেন যুদ্ধে বাড়তি ইন্ধন জোগাচ্ছে বলে অভিযোগ ট্রাম্পের। আগস্টের শেষ সপ্তাহে হোয়াইট হাউস ইউরোপীয় দেশগুলিকে আহ্বান জানায় ভারতসহ অন্য দেশগুলির ওপর আমেরিকার মতোই নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক আরোপ করতে। এর মধ্যে ছিল নয়াদিল্লি থেকে সমস্ত তেল ও গ্যাস আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করার দাবি। ট্রাম্প প্রশাসনের বিশ্বাস, এই অর্থনৈতিক চাপ রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য করবে এবং ইউক্রেন যুদ্ধে শান্তি আনবে।
যদিও তাতে কান দেয়নি ইইউ। ট্রাম্প শুল্কের ধাক্কা সামলাতে ভারত নতুন বাজার খুঁজছে। বর্তমানে ইইউ ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার; ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দুই পক্ষের পণ্য বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তাই উভয়পক্ষই বছর শেষে আলোচনার সমাপ্তি চায়।
এফটিএ-র বাইরেও ভারত ও ইইউ একটি বৃহত্তর কৌশলগত এজেন্ডা এগিয়ে নিচ্ছে। ইইউ আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে তাদের নতুন কৌশলগত ভিশন প্রকাশ করবে এবং আগামী বছরের শুরুতে ভারতে নির্ধারিত বার্ষিক সম্মেলনে তা আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইইউ-র বাণিজ্য কমিশনার মারোস সেফকোভিচ ও কৃষি কমিশনার ক্রিস্টোফ হ্যানসেন এই সপ্তাহেই নয়াদিল্লিতে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেবেন। আগামী তিন মাসে রয়েছে একাধিক কর্মসূচি।