হুগলির চুঁচুড়ায় তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের হঠাৎ পদক্ষেপে সোমবার সন্ধ্যায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায়। ব্যান্ডেল মোড়ে তৃণমূল সমর্থিত গাড়ি চালক সংগঠনের একটি দলীয় কার্যালয়ে তিনি তালা ঝোলানোর নির্দেশ দেন। এমনকি, অবিলম্বে পদক্ষেপ না করলে পার্টি অফিস প্রকাশ্যে ভেঙে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন।
সূত্রের খবর, জল জমার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে এলাকায় গিয়েছিলেন বিধায়ক। জিটি রোডের ধারে গাড়ি থেকে নামতেই চোখে পড়ে, কার্যালয়ের লাগোয়া গাছতলায় কয়েকজন যুবক প্রকাশ্যে গাঁজা টানছে। মুহূর্তে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে ‘ধর ধর’ বলে তেড়ে যান, যদিও অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।
এরপরই অসিতের বিস্ফোরক মন্তব্য। তিনি বলেন, “আমাকে বলেছিল, তাই এই কার্যালয় উদ্বোধন করেছিলাম। কিন্তু তৃণমূলের নাম-সিম্বল ব্যবহার করে সমাজবিরোধী কাজ চলবে, এটা আমি কোনওভাবেই হতে দেব না।”
ঘটনায় উপস্থিত কর্মীদের কড়া ধমক বিধায়কের, দলের কার্যালয়ের সামনে এ ধরনের বেআইনি কাজ চলছিল কীভাবে? তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট, শৃঙ্খলার বাইরে গিয়ে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করলে তার ফল ভোগ করতে হবে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় পুলিশ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য ইন্দু পাসোয়ান ও উপপ্রধান প্রদীপ রায়। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে বিধায়ক স্পষ্ট নির্দেশ দেন, অবিলম্বে কার্যালয়টি বন্ধ করতে হবে। তাঁর হুঁশিয়ারি, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি তালা না ঝোলে, তবে তিনি নিজেই কার্যালয় ভেঙে দেবেন।
তৃণমূলের ভেতরে এই পদক্ষেপকে অনেকে দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষার দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখছেন। তবে বিরোধী শিবিরের দাবি, বিধায়কের এ পদক্ষেপ প্রমাণ করে তৃণমূলের তৃণমূল স্তরে শৃঙ্খলার ঘাটতি প্রকট হয়ে উঠেছে। যদিও স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশের মতে, অসিত মজুমদারের অবস্থান স্পষ্ট, দলীয় নাম ব্যবহার করে কেউ বেআইনি কাজ করলে তার বিরুদ্ধে তিনি কড়া ব্যবস্থা নেবেন। ফলে, চুঁচুড়ায় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় ঘিরে এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা ওই পার্টি অফিসের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে, তালা ঝুলল কি?