এবারের গণেশ চতুর্থীতে পুনে ও পিম্প্রি-চিঞ্চওয়াড়ে মোট ৮ লক্ষাধিক গণেশ মূর্তি সংগ্রহ করেছে পৌর প্রশাসন। বম্বে হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী প্রাকৃতিক জলাশয়ে বিসর্জন সীমিত হওয়ায়, নাগরিকরা ব্যাপকভাবে কৃত্রিম ট্যাঙ্ক ও পৌরসভা নির্ধারিত কেন্দ্রে মূর্তি বিসর্জন করেছেন।
পুনে মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের (PMC) তথ্য অনুযায়ী, এবছর ইস্পাতের ট্যাঙ্কে বিসর্জন দেওয়া হয়েছে ৩,৬২,৩১৯টি মূর্তি, যা গত বছরের ২,৮২,৬০৪ থেকে অনেক বেশি। কংক্রিটের কৃত্রিম ট্যাঙ্কে বিসর্জন দেওয়া হয়েছে ১,১৩,১৩৬টি মূর্তি, যেখানে গত বছর এই সংখ্যা ছিল ১,০১,২৮১। সব মিলিয়ে কৃত্রিম জলাশয়ে বিসর্জনের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬,৫৪,৪১০, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় এক লক্ষ বেশি।
পৌরসভা নির্ধারিত দানকেন্দ্রে মোট ১,৭৮,৯৫৫ মূর্তি জমা পড়েছে। যদিও এই সংখ্যা গত বছরের তুলনায় সামান্য বেশি, তবে ২০২৩ সালের তুলনায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখা গেছে।
পাশাপাশি ১১ দিনের উৎসব শেষে পুনে পুরসভা জানিয়েছে, মোট ৯,২৩,৩৯৮ কেজি ফুলের বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৭,০৬,৪৭৮ কেজি।
পিম্প্রি-চিঞ্চওয়াড় মিউনিসিপাল কর্পোরেশন (PCMC) জানিয়েছে, নদীঘাটে স্থাপিত ৮টি কেন্দ্রে মোট ১,৬২,৬৩৬ মূর্তি সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৯,৫৯১টি পরিবেশবান্ধব এবং ১,৩৩,০৪১টি প্লাস্টার অফ প্যারিসের মূর্তি। কর্মকর্তাদের দাবি, শহরের তিনটি নদীতে এবছর একটিও মূর্তি বিসর্জন হয়নি।
বম্বে হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল ছয় ফুট পর্যন্ত সব মূর্তি কৃত্রিম জলাশয়ে বিসর্জন করতে হবে। এর ফলে পুনে পুরসভা, শহরজুড়ে ২৪১টি সংগ্রহ কেন্দ্র, ৬৪৮টি ইস্পাত ট্যাঙ্ক ও ৩৮টি কংক্রিট ট্যাঙ্ক স্থাপন করে।
পৌরসভার কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান সন্দীপ কাদম বলেন,
“আমরা এবছর বিশেষ করে ইস্পাতের ট্যাঙ্কের সংখ্যা বাড়িয়েছি। নাগরিকরা সচেতনভাবে সাড়া দিয়েছেন এবং মূর্তি বিসর্জনে পরিবেশবান্ধব বিকল্পকে গ্রহণ করেছেন।”
পুনে ও পিম্প্রি-চিঞ্চওয়াড়ে এ বছরের গণেশ বিসর্জন একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছে—পরিবেশ সুরক্ষা এখন আর কেবল প্রচার নয়, বরং নাগরিক অভ্যাসে পরিণত হচ্ছে।
বম্বে হাইকোর্টের নির্দেশে প্রাকৃতিক জলাশয়ে বিসর্জন বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যত একটি মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। আদালত পরিবেশ রক্ষার যুক্তি তুলে ধরে প্রশাসনকে কৃত্রিম ট্যাঙ্ক ও বিকল্প ব্যবস্থার দিকে ঠেলে দিয়েছে।
সংখ্যাগুলোই সব বলে দিচ্ছে। গত বছরের তুলনায় প্রায় এক লক্ষ বেশি মূর্তি কৃত্রিম ট্যাঙ্কে বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। এটিই প্রমাণ করে যে মানুষ এখন সচেতনভাবে পরিবেশবান্ধব পথে এগোচ্ছে। বিশেষত শহরের তিনটি নদীতে এবছর একটিও মূর্তি বিসর্জন না হওয়া একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। পুনে ও পিম্প্রি-চিঞ্চওয়াড়ের পরিবেশ সচেতনতার এই নিদর্শন গোটা মহারাষ্ট্র এবং দেশের জন্য একটি মডেল হিসেবে ধরা যেতে পারে।