গত বছর কলকাতা নাইট রাইডার্সকে চ্যাম্পিয়ন করার পর এবারের আইপিএলে পঞ্জাব কিংসকেও ফাইনালে তুলেছিলেন শ্রেয়স আইয়ার। তবু এরপরেও তাঁর ভারতের হয়ে তিন ফরম্যাটেই খেলার সাধ অপূর্ণ থেকে গিয়েছে। জায়গা হয়নি চলতি এশিয়া কাপের দলে। এবার সেই আইয়ারই সামনে আনলেন নিজের জীবনের এক ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা। জানালেন, মাত্র কিছুদিন আগেই কীভাবে শেষ হয়ে যেতে বসেছিল তাঁর কেরিয়ার।
২০২৪ সালের আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে শিরোপা এনে দেওয়ার পরও শ্রেয়সকে ছেড়ে দেয় শাহরুখ খানের ফ্র্যাঞ্চাইজি। এরপর দীর্ঘদিন তিনি টিম ইন্ডিয়ারও বাইরে ছিলেন। তবে আইয়ারের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন ঘটে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। চলতি বছরের শুরুতে সেই প্রতিযোগিতায় তিনি ছিলেন ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ তথা প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় সর্বাধিক রান সংগ্রাহক। ৫ ম্যাচে করেন ২৪৩ রান। এরপর আইপিএলের ১৭ ম্যাচে ১৭৫.০৭ স্ট্রাইক রেটে আইয়ারের সংগ্রহ ৬০৪। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি তাঁর দুর্দান্ত নেতৃত্বের সুবাদেই ১১ বছর পর আইপিএলের ফাইনালে পৌঁছে যায় পঞ্জাব কিংস।
তবু এরপরেও ভারতের টি-টোয়েন্টি দলে ব্রাত্য তিনি। যদিও তা নিয়ে খুব একটা মাথাব্যথা নেই আইয়ারের। সাম্প্রতিক একটি সাক্ষাৎকারে বরং তিনি স্মৃতিচারণ করেছেন মাত্র ৩০ মাস আগের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার। সেই সময় পিঠের চোট চাপের মুখে ফেলেছিল ভারতীয় ব্যাটারের কেরিয়ারকে। গত ২০২৩ সালে তিনি চোট পেয়েছিলেন পিঠের নিচের অংশ থেকে পা পর্যন্ত প্রসারিত সায়াটিকা নার্ভে। এর জেরে আইয়ারের ডান পায়ে দেখা দেয় পক্ষাঘাতের আশঙ্কা। যার জেরে কার্যত শেষ হতে বসেছিল তাঁর ক্রিকেট কেরিয়ার।
সাক্ষাৎকারটিতে সেই ঘটনার স্মৃতিচারণ করে আইয়ার বলেন, “কেউ বুঝতে পারবে না যে, আমি কতটা যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে গিয়েছি। আমার এক পা পুরোপুরি পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। মেরুদণ্ডের অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আপনি রড বসিয়ে এই সমস্যা সামলাতে পারেন। কিন্তু যেভাবে নার্ভটি ছিঁড়ে গিয়েছিল, তা সত্যিই বিপজ্জনক। ওই ব্যথা ছিল মারাত্মক। আমার পায়ের আঙুলে পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল ব্যথা। যা খুবই ভয়ঙ্কর ছিল।”
তিনি আরও যোগ করেন, “মানুষ সমস্ত ক্রীড়াবিদকেই রোবট হিসেবে দেখে। যাদের প্রতিটি খেলাতেই পারফর্ম করতে হয়। কিন্তু মানুষ জানে না, পর্দার আড়ালে কী ঘটছে।”
আইপিএলে দুর্দান্ত পারফর্মেন্স সত্ত্বেও কেন ঠাঁই হল না এশিয়া কাপের দলে? এই নিয়েও প্রশ্ন করা হয় আইয়ারকে। যার জবাবে তিনি বলেন, “আমি কেবল নিয়ন্ত্রণ করা যায় এমন বিষয়গুলিকেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। আমি কেবল আমার দক্ষতা এবং শক্তির উপর কাজ চালিয়ে যেতে পারি। আর যখন সুযোগ আসবে, আমি তখন তা দুই হাতেই গ্রহণ করব।” এর পাশাপাশি পঞ্জাব কিংসের প্রতি নিজের কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন শ্রেয়স। তাঁর কথায়, “একজন অধিনায়ক এবং খেলোয়াড় হিসেবে আমি অনেক কিছু দিতে পারি। যদি আমি সম্মান পাই, তা হলে যে কোনও কিছু অর্জন করা সম্ভব। পঞ্জাবে এটাই ঘটেছিল। তারা আমাকে প্রয়োজনীয় সকল সহায়তা দিয়েছে, তা সে কোচ, ম্যানেজমেন্ট, অথবা খেলোয়াড় যাই হোক না কেন।”