সুপ্রিম কোর্টে সাংবিধানিক বেঞ্চের মামলায় উঠে এল নেপালে চলতে থাকা হিংসাত্মক বিক্ষোভ এবং গত বছর জুলাইয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার বিষয়। শীর্ষ আদালতের ১২ এপ্রিলের রায়ে রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালদের কাছে পাঠানো বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ সংক্রান্ত রায়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর রেফারেন্স সংক্রান্ত মামলা নিয়ে বর্তমানে সাংবিধানিক বেঞ্চে শুনানি চলছে।
বুধবার সেই শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই বলেন, “আমরা আমাদের সংবিধান নিয়ে গর্বিত। দেখুন আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোতে কী হচ্ছে। নেপালে মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে ২১ জন নিহত হয়েছেন।”
এসময় বিচারপতি বিক্রম নাথ যোগ করেন, “হ্যাঁ, বাংলাদেশেও হয়েছিল”। তিনি মনে করিয়ে দেন, গত বছর ছাত্র নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভে বাংলাদেশে হিংসাত্মক আন্দোলন শুরু হয়েছিল, যেখানে শতাধিক মানুষ নিহত হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন সহ গুরুত্বপূর্ণ ভবন দখল ও ভাঙচুর করা হয়। সেই অস্থিরতার মধ্যেই হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন এবং নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নেপাল ও বাংলাদেশের ঘটনাপ্রবাহে সব থেকে বড় মিল হল, সংবিধান ও আইনের শাসনের সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া।
রাষ্ট্রপতির রেফারেন্স শুনানিতে সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা রাজ্যপালদের পক্ষ নিয়ে যুক্তি দেন। তিনি দাবি করেন, “১৯৭০ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত মাত্র ২০টি বিল সংরক্ষিত হয়েছে। এর মধ্যে তামিলনাড়ু সরকারের সাতটি বিল রাজ্যপাল আর এন রবি আটকে দিয়েছিলেন।”
প্রধান বিচারপতি গাভাই পরিসংখ্যান নির্ভর যুক্তি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “আমরা এক পক্ষের পরিসংখ্যান গ্রহণ করিনি, অন্য পক্ষেরটিও নেব না।”
তিনি মনে করিয়ে দেন, আদালত আগেই রাজ্যপাল আর এন রবির পদক্ষেপকে “স্বেচ্ছাচারী ও বেআইনি” আখ্যা দিয়েছিল এবং স্পষ্ট করেছিল যে, কোনও বিল দ্বিতীয়বার রাজ্য বিধানসভা পাশ করলে তা ৩০ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপালের অনুমোদন পেতে হবে।
রাষ্ট্রপতি এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সংবিধানের ১৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের মতামত চেয়েছেন।