কথায় বলে রতনে রতন চেনে। চার্লি কার্কের ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হয়ে ওঠার পিছনে এই প্রবাদ অনেকটাই কাজ করেছে বলে মনে করেন আমেরিকার রাজনৈতিক চর্চা ও সমাজবিজ্ঞানের গবেষণার সঙ্গে যুক্ত মানুষজন। আসলে অতি ডানপন্থার সমর্থক ছিলেন চার্লি। ইলিনয়ের এই বাসিন্দা প্রথম থেকেই কট্টর ডানপন্থী রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন। তার পরিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। আর এই যোগাযোগেই অসম বয়সী হলেও একে অপরকে চিনে নেন ট্রাম্প ও কার্ক। ট্রাম্পের জন্য তরুণ ভোটারদের প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন চার্লি।
আমেরিকান ডানপন্থী রাজনৈতিক কর্মী চার্লি কার্ক ছিলেন সেই দলের অংশ যারা রিপাবলিকান রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের এজেন্ডা কী হবে তা ভাবতে সাহায্য করতেন। মাত্র ৩১ বছর বয়সেই চার্লি হয়ে ওঠেন ট্রাম্পের কঠোর ডানপন্থী আন্দোলনের তরুণ প্রজন্মের অন্যতম মুখপাত্র। আর হবেন নাই বা কেন? প্রথম থেকেই কার্ক ছিলেন আগ্রাসী বক্তা। মাত্র ১৮ বছর বয়সে কার্ক প্রতিষ্ঠা করেন ‘টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ’, যা এক দশকের মধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় তরুণ রক্ষণশীল সংগঠনে পরিণত হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় কার্কের ছিল মিলিয়ন মিলিয়ন ফলোয়ার। ট্রাম্পের রাজনৈতিক মতাদর্শ সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে পরিবেশন করতেন তিনি। তার প্রোগ্রাম ‘দ্য চার্লি কার্ক শো’ পডকাস্টে প্রতি মাসে ৫,০০,০০০-এরও বেশি শ্রোতা ছিলেন। তাঁর তীক্ষ্ণ বুদ্ধির বিশ্লেষণ ও প্রতিদ্বন্দ্বীদের দেওয়া পাল্টা জবাবে অনেকেই আনন্দ পেতেন। তিনি ‘টাইম ফর আ টার্নিং পয়েন্ট’ এবং ‘দ্য কলেজ স্ক্যাম’ সহ বেশ কয়েকটি বইও লিখেছেন। তাঁর রাজনৈতিক মতাদর্শ ছিল ট্রাম্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। ২০২৪ সালের নির্বাচনে তিনি রিপাবলিকান দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে ওঠেন। তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের এতটাই ঘনিষ্ঠ ছিলেন যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁকে তরুণদের হৃদয়ের কথা বোঝে এমন ব্যক্তি হিসেবে অভিহিত করেন। কার্ক ইজরায়েলের একজন বড় সমর্থকও ছিলেন। অন্যদিকে সেদেশের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু তাঁকে ‘ইজরায়েলের বন্ধু’ হিসেবে বর্ণনা করেন।
আর এই কারণেই চার্লি কার্কের এই হত্যা বড় ধাক্কা দিয়েছে রিপাবলিকান দলের পাশাপাশি স্বয়ং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকেও। তিনি এই হত্যাকাণ্ডকে আমেরিকার জন্য একটি ‘ঘৃণ্য’ এবং ‘অন্ধকার’ সময় বলে বর্ণনা করেছেন। প্রশাসন এই জঘন্য কাজের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেককে খুঁজে বের করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।