কলকাতার রাস্তায় সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর কারণ এখন বাইক। ২০২৪ সালের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, শহরের মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৪৩ শতাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী দুই চাকার এই যান।
কলকাতার পুলিশের প্রকাশিত বার্ষিক ট্র্যাফিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাইক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মারা গেছেন ৪৩১ জন, যা মোট মৃত্যুর ২৩ শতাংশ। এই সংখ্যাটি গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৩৬২ জন এবং বাস দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ২৮৯ জনের চেয়েও অনেক বেশি। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, বাসের কারণে মৃত্যু কমে এলেও বাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু ক্রমাগত বাড়ছে।
এই চিত্র শুধু কলকাতার নয়, বরং সারা ভারতের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। সড়ক পরিবহন মন্ত্রকের একটি রিপোর্ট বলছে, ২০২৩ সালে সারা দেশে মোট সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতদের মধ্যে প্রায় ৪৫ শতাংশ ছিলেন বাইক আরোহী।
কোথায় দুর্ঘটনা বেশি, কোথায় কম?
রিপোর্ট অনুযায়ী, দক্ষিণ কলকাতার কিছু এলাকা যেমন ইএম বাইপাস, যাদবপুর কানেক্টর, এসসি মল্লিক রোড এবং বাঘাযতীন তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। এই এলাকাগুলোতে মাত্র তিনটি মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটেছে।
অন্যদিকে, পোর্ট এলাকার মতো কিছু অঞ্চলে দুর্ঘটনা সবচেয়ে বেশি। সেখানে গত বছর ১৮টি মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটেছে, যা আগের বছরের ১৩টি দুর্ঘটনার চেয়ে বেশি। এছাড়াও, তিলজলা ট্র্যাফিক গার্ডের এলাকাতেও ১৯টি মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এই দুটি এলাকাতেই শহরের মোট মারাত্মক দুর্ঘটনার প্রায় ২০ শতাংশ ঘটেছে।
২০২৪ সালে মোট ১৯১ জন মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন, যা ২০২৩ সালের ১৫৯ জনের তুলনায় অনেকটাই বেশি। তবে, এই সময়ে আহত মানুষের সংখ্যা সামান্য কমেছে। ২০২৩ সালে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৭৯ জনই ছিলেন পথচারী। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাস ছিল সবচেয়ে বিপজ্জনক, যেখানে ২১ জন মারা গেছেন। আর আগস্ট ছিল সবচেয়ে নিরাপদ মাস, যেখানে ১১ জন মারা গেছেন।
ডিসিপি ট্র্যাফিক শ্রীকান্ত জগন্নাথরান ইয়েলওয়াড় এই বিষয়ে জানান, তাঁরা এই তথ্য সম্পর্কে সচেতন। পাশাপাশি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং দুর্ঘটনার হার যাতে নিয়ন্ত্রণ করা যায় তার জন্য তাঁরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছেন।