লাদাখে গতকালের ব্যাপক হিংসাত্মক ঘটনায় কংগ্রেস কাউন্সিলর ফুনসগ স্তানজিন সেপাগের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনায় অন্তত ৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ৯০ জন আহত হয়েছেন।
ঘটনার পর লেহ জেলায় কারফিউ জারি করা হয় এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আইটিবিপি, সিআরপিএফ ও স্থানীয় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কারগিলে প্রশাসনিক ও সাংবিধানিক সুরক্ষার দাবিতে ডাকা বন্ধের জেরে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।
গতকাল বিক্ষুব্ধ জনতা বিজেপি কার্যালয় ও লাদাখ হিল কাউন্সিল সচিবালয় পুড়িয়ে দেয়। কংগ্রেসকে দোষারোপ করে ছবি প্রকাশ করেছে বিজেপি, যেখানে কাউন্সিলর সেপাগকে ওই ভিড়ের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। লেফটেন্যান্ট গভর্নর কবিন্দ্র গুপ্ত এই ঘটনাকে ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক পরিবেশ ও মানবাধিকার কর্মী সোনম ওয়াংচুকের উস্কানিমূলক বক্তৃতাকেই বিশৃঙ্খলা ও হিংসাত্মক আন্দোলনের জন্য দায়ী করেছে। গত ১৫ দিন ধরে তিনি পূর্ণরাজ্যের অধিকার ও সাংবিধানিক সুরক্ষার দাবিতে অনশন করছিলেন, যা তিনি গতকাল লেহ-তে বিশৃঙ্খলা শুরু হওয়ার পরই প্রত্যাহার করেন।
মন্ত্রকের অভিযোগ, অনশনের সময় ওয়াংচুক ‘আরব বসন্ত’ ধাঁচের আন্দোলন ও নেপালের ‘জেন-জেড’ বিক্ষোভের উদাহরণ টেনে মানুষকে উস্কানি দিয়েছেন। ওই বক্তৃতার পরই ভিড় অনশন মঞ্চ ছেড়ে রাজনৈতিক দল ও সরকারি কার্যালয়ে হামলা চালায়।
২০১৯ সালের আগস্টে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের পর লাদাখকে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা হয়েছিল। প্রথমে এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও এক বছরের মধ্যেই রাজনৈতিক শূন্যতা ও কেন্দ্রশাসিত প্রশাসনের প্রতি অসন্তোষ বাড়তে শুরু করে।
ক্রমে লেহ-এর বৌদ্ধপ্রধান সংগঠন ও কারগিলের মুসলিমপ্রধান সংগঠন একজোট হয়ে ‘অ্যাপেক্স বডি অব লেহ’ ও ‘কারগিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স’-এর যৌথ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে বৃহৎ আন্দোলনে নামে। কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে একাধিক দফার বৈঠক ব্যর্থ হয়, সর্বশেষ মার্চ মাসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে আলোচনাও ভেস্তে যায়।
স্থানীয় নেতাদের দাবি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁদের পূর্ণরাজ্যের ও ষষ্ঠ তফসিলের দাবি সরাসরি নাকচ করেছেন।