১৫০ কোটিরও বেশি মূল্যের বিটকয়েন কেলেঙ্কারির অভিযোগে মানি লন্ডারিং মামলায় অভিযুক্ত অভিনেত্রী শিল্পা শেট্টি-র স্বামী, ব্যবসায়ী রাজ কুন্দ্রা। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট সম্প্রতি স্পেশাল প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্টে আদালতে রাজ কুন্দ্রার বিরুদ্ধে একটি চার্জশিট দাখিল করেছে।
ইডির দাবি, রাজ কুন্দ্রা ‘গেইন বিটকয়েন’ পঞ্জি কেলেঙ্কারির মূল চক্রী প্রয়াত অমিত ভরদ্বাজের কাছ থেকে ২৮৫টি বিটকয়েন পেয়েছিলেন, যেগুলির বর্তমান মূল্য ১৫০.৪৭ কোটি টাকা। ইডির মতে, এই বিটকয়েনগুলির তিনি বেনিফিশিয়াল মালিক।
যদিও রাজ কুন্দ্রা দাবি করেছিলেন যে তিনি এই লেনদেনে কেবল একজন ‘মধ্যস্থতাকারী’ হিসেবে কাজ করেছিলেন। কিন্তু ইডি চার্জশিটে বলেছে, রাজ কুন্দ্রা এবং অমিত ভরদ্বাজের বাবা মহেন্দ্র ভরদ্বাজের মধ্যে স্বাক্ষরিত ‘টার্ম শিট’ নামে একটি চুক্তির উপর ভিত্তি করে এটি প্রমাণিত হয় যে তিনি মধ্যস্থতাকারী নন, বরং নিজেই লেনদেনের অংশ ছিলেন। ইডি চার্জশিটে আরও বলেছে যে কুন্দ্রা জেনেশুনে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ গোপন করেছেন। তিনি এই ২৮৫টি বিটকয়েন পাওয়ার পরেও তা তদন্তকারী সংস্থার কাছে ফেরত দেননি, ইচ্ছাকৃতভাবে বিটকয়েন ওয়ালেট অ্যাড্রেসগুলি গোপন করেছেন।
২০১৮ সাল থেকে একাধিকবার সুযোগ দেওয়া হলেও তিনি ওয়ালেট অ্যাড্রেস দেননি। এর কারণ হিসেবে রাজ কুন্দ্রা তাঁর আইফোন এক্স নষ্ট হওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু ইডির দাবি ইচ্ছাকৃতভাবে প্রমাণ নষ্টের জন্যই তিনি নিজের আইফোন নষ্ট করেছেন। ইডির অভিযোগ, রাজ কুন্দ্রা অপরাধমূলক কার্যকলাপের মাধ্যমে পাওয়া এই অর্থকে বৈধ বলে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। তিনি তাঁর স্ত্রী অভিনেত্রী শিল্পা শেট্টির সঙ্গে বিটকয়েনের বিনিময়ে বাজার মূল্যের অনেক কম দামে একটি ‘জেনুইন লেনদেন’ করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি এই ‘অবৈধ’ অর্থের উৎসকে আড়াল করার চেষ্টা করেছিলেন।
অর্থাৎ, PMLA আইনের অধীনে থাকা প্রক্রিয়াকে ব্যর্থ করতে তিনি অপরাধের মাধ্যমে অর্জিত অর্থকে লেয়ারিং করে বৈধ বলে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। এই চার্জশিটে রাজ কুন্দ্রা ছাড়াও ব্যবসায়ী রাজেশ সতিজা-র নামও রয়েছে।
উল্লেখ্য, রাজ কুন্দ্রার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল মহারাষ্ট্র পুলিশ এবং দিল্লি পুলিশের করা এফআইআরের ভিত্তিতে। এই এফআইআরগুলি একটি কোম্পানি, ভ্যারিয়েবল টেক প্রাইভেট লিমিটেড এবং প্রয়াত অমিত ভরদ্বাজ, অজয় ভরদ্বাজ, বিবেক ভরদ্বাজ, সিম্পি ভরদ্বাজ ও মহেন্দ্র ভরদ্বাজের বিরুদ্ধে করা হয়েছিল।
তদন্তে জানা যায়, বিটকয়েনগুলি মাইনিং-এর জন্য ব্যবহার করার কথা ছিল এবং বিনিয়োগকারীরা ক্রিপ্টো অ্যাসেটে বড় মুনাফা পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের প্রতারণা করে এবং অবৈধভাবে অর্জিত বিটকয়েনগুলি অনলাইন ওয়ালেটে লুকিয়ে রাখা হয়। এছাড়াও আরও একটি ৬০ কোটি টাকার প্রতারণা মামলায় তদন্তের মুখে পড়েছেন রাজ কুন্দ্রা এবং শিল্পা শেট্টি।