অসমের আকাশে এখনও যেন ভাসছে এক অদৃশ্য কান্নার সুর। উৎসবের দিন, দুর্গাপূজা, তবুও নেই ঢাকের গর্জন, নেই আলো-ঝলমলে মণ্ডপের হাসি-খুশি ছবি। সর্বত্র বিরাজ করছে নীরবতা আর শূন্যতা। কারণ, নেই অসমের আত্মা জুবিন গর্গ।
শতাব্দী-প্রাচীন মেলেং মিলন মন্দিরে ষষ্ঠীর দিনে সাধারণত পায়ে পায়ে ভিড় জমে। সঙ্গীত, নাটক, কবিতা, নাচ, অগণিত মানুষ উপভোগ করেন উৎসব। কিন্তু এই বছর? মণ্ডপের আলো জ্বললেও চোখে পড়ছে না উৎসবের আমেজ। কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নেই, নেই হইহল্লা। শুধুই ধূপ, প্রদীপ আর মন্ত্রপাঠ। মনে হচ্ছে যেন পূজা নয়, বরং এক প্রার্থনা সভা, এক শোকানুষ্ঠান।
মন্দির কমিটির এক প্রবীণ সদস্য বলেন, “আমরা কখনও ভাবিনি, দুর্গাপূজা গানহীন হবে। কিন্তু জুবিনদা নেই, তাই গান বাজানো আমাদের কাছে অসম্ভব মনে হয়েছে। আমরা শুধু দেবীর পায়ে প্রার্থনা রাখলাম, অসম যেন আবার হাসতে পারে।”
পূজা মণ্ডপের বাইরে বসে থাকা কিছু কলেজ পড়ুয়ার একজনের কথায়, “গত বছর আমরা জুবিনদার গান গাইতে গাইতে শোভাযাত্রা করেছিলাম। এ বছর মনে হচ্ছে, পূজা নয়, আমরা সবাই মিলে শোক পালন করছি।”
অসমে দুর্গাপূজা শুধু ধর্মীয় নয়, বরং সাংস্কৃতিক মিলনমেলা। কিন্তু এইবার তা রূপ নিয়েছে সমবেদনার মঞ্চে। জুবিন গর্গের মৃত্যুর পর, রাজ্যের শিল্প, সংস্কৃতি, উৎসব সবকিছু যেন থমকে গেছে। ষষ্ঠীর দিন, যেখানে ঢাক-কাঁসর বাজানোর কথা, সেখানে শোনা গেল প্রার্থনার সুর।
Leave a comment
Leave a comment