দেশজুড়ে জিএসটি ২ চালু হয়েছে সেই ২২ সেপ্টেম্বর থেকে। তবে কলকাতা সহ রাজ্যের অধিকাংশ দোকানে ওষুধ কিনতে হচ্ছে আগের মতো পুরনো দামে। অথচ অনেক ওষুধেই জিএসটি ১৮ এবং ১২ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ৫ শতাংশ।রাজ্যে ওষুধের পাইকারি বিক্রেতা এবং খুচরা বিক্রেতাদের নোডাল সংগঠন, বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (BCDA) বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো ওয়াকিবহাল। সংগঠনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দোকানদারদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার জন্য রাজ্য এবং জিএসটি কর্তৃপক্ষের কাছেও আবেদন করা হয়েছে।নতুন GST হার কার্যকর হওয়ার পর, ওষুধ প্রস্তুতকারকরা ইতিমধ্যেই প্রতিটি খুচরা বিক্রেতার কাছে ওষুধের ব্যাচ-ভিত্তিক তালিকা পাঠিয়েছে। ওষুধ কোম্পানি পাঠানো তালিকায় প্রতিটি ওষুধের স্ট্রিপেই দাম কম কমানোর কথা উল্লেখ রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, যদি গ্লিমিপিরাইড (Glimepiride (1 mg)-এর একটি স্ট্রিপের আগের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (MRP) ৪২.১০ টাকা হয়, তবে ২২ সেপ্টেম্বরের পরে এর দাম কমে হয়েছে ৩৯.৪০ টাকা।আবার একইভাবে, রোসুভাস্ট্যাটিন (Rosuvastatin, 10 mg)-এর একটি স্ট্রিপ আগে ৩৬৯ টাকা MRP-তে বিক্রি হত। জিএসটি ২-এর জন্য এখন ৩৪৫.৯০ টাকা নেওয়ার কথা। অভিযোগ, ওষুধের অধিকাংশ দোকানদার আগের বর্ধিত দামেই এটি বিক্রি করছেন। ভুক্তভোগী সচেতন ক্রেতাদের অভিযোগ, “একসঙ্গে সব ওষুধের দাম আগের এমআরপির মতো নিয়ে, এককালীন একটা ছাড় দিচ্ছে দোকানদার। কিন্তু এটিও প্রতারণার একটা নতুন হাতিয়ার। কারণ প্রথমে জিএসটি হ্রাসের বিষয়টি দেখে নিয়েই তারপরেই ক্রেতাকে ছাড় দেওয়া উচিত।”বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (BCDA)-এর কর্তার বক্তব্য, জিএসটি কমার জেরে, ওষুধের বিল কমপক্ষে ১১ শতাংশ থেকে ৬.২ শতাংশ হ্রাস পাওয়া উচিত। কারণ বেশিরভাগ ওষুধে জিএসটি ১৮% এবং ১২% থেকে কমে হয়েছে ৫%। তাই Price to Stockist এবং Price to Retailer যথাক্রমে ১১ শতাংশ এবং ৬.২ শতাংশ।বিসিডিএ কর্তা আরও বলেছেন, “আমরা রাজ্য জুড়ে আমাদের অনুমোদিত দোকানে মূল্যের পার্থক্যের পোস্টার পাঠিয়েছি এবং এটি একটি বিশিষ্ট স্থানে প্রদর্শন করাও বাধ্যতামূলক করেছি। দুর্ভাগ্যবশত, কিছু কিছু ওষুধের দোকানের মালিক আমাদের সদস্য নন। সেই সব দোকান থেকেই বেশি করে অভিযোগ আসছে”।শহর কলকাতায় কমবেশি ৩,০০০ বিসিডিএ-র নথিভুক্ত ওষুধ দোকান রয়েছে। সমিতির পক্ষ থেকে প্রত্যেকটি দোকানেই নোটিস পাঠানো হয়েছে। জানানো হয়েছে, আগের কেনা পণ্যেও জিএসটি ২ লাগু করতে। এবং দাম কমার জেরে দোকান মালিকদের যা ক্ষয়ক্ষতি, তা ক্ষতিপূরণে পুষিয়ে দেওয়া হবে।ওষুধ বিপণনে যুক্ত এক এজেন্ট বলেছেন, “স্টকের কোনও অভাব নেই, এবং খুচরা বিক্রেতারা এখন কম দামেই (জিএসটি ২ সৌজন্যে) পণ্য পাচ্ছেন। তাই তাঁরা কোনও গ্রাহককে, পুরনো এমআরপিতে চার্জ করতে পারেন না”। পুরনো দামে ওষুধ বিক্রি করা দোকান মালিকদের বিরুদ্ধে তাঁদের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ করা সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। এজেন্টের বক্তব্য, এই বিষয়ে যা কিছু পদক্ষেপ, তা শুধুমাত্র করতে পারে রাজ্য ওষুধ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড এবং জিএসটি কর্তৃপক্ষ।