পূর্ব ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় এবার পদ্মফুলের বাম্পার ফলন। যার কারণে দুর্গাপুজোর ফুল সরবরাহ নিয়ে কোনো সঙ্কট দেখা দেবে না। প্রচুর স্থানীয় উৎপাদন এবং অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এবার রাজ্যে অন্য কোনো রাজ্য থেকে ফুল আমদানি করার দরকার নেই। এর ফলে ফুলের দামও যথেষ্ট কমেছে, প্রতি ফুল মাত্র ৩-৪ টাকা। এই সুবিধা পুজো কমিটিগুলোর জন্য বেশ সুবিধার। এছাড়াও, চাষিরা পদ্মফুল সংরক্ষণ করছেন, যাতে পুরো পুজো জুড়ে ফুলের সরবরাহ নিশ্চিত হয়।
দক্ষিণবঙ্গের এই প্রচুর পদ্মফুল উৎপাদনের ফলে দুর্গাপুজোর জন্য প্রয়োজনীয় পদ্মফুলের কোনো ঘাটতি হবে না। হাওড়া, মেদিনীপুর, বীরভূম এবং বর্ধমানের মতো জেলায় এবার প্রচুর পদ্ম চাষ হয়েছে, যা দেবী দুর্গার আরাধনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অল বেঙ্গল ফ্লাওয়ার গ্রোয়ার্স অ্যান্ড ফ্লাওয়ার ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক জানিয়েছেন, “এবার স্থানীয় উৎপাদন অত্যন্ত ভালো হয়েছে। পুজো আগেভাগে হওয়ায় এবং শিশির না থাকায় ফলন দারুণ হয়েছে। এছাড়াও, বন্যা না হওয়ায় ফুলের গুণমান ও পরিমাণ দুটোই ঠিকঠাক আছে।”
উল্লেখ্য, প্রতিবছর দুর্গাপুজোর সময় পদ্মফুলের চাহিদা চরমে থাকে। শুধুমাত্র মহাষষ্ঠীর দিন রাজ্যে আনুমানিক ১ কোটি ১০ লাখ ফুলের প্রয়োজন হয়। দেবীর ১০৮টি পদ্মফুলের নিবেদনের রীতি এই উৎসবের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
আগের বছরগুলিতে স্থানীয় পদ্মফুলের ঘাটতির কারণে প্রায়ই ওড়িশা থেকে ফুল আমদানি করতে হতো, যা পুজো কমিটিগুলোর ব্যয় বাড়িয়ে দিত। কিন্তু এবার এই পরিস্থিতি অন্য। স্থানীয় সরবরাহ চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট। অন্য রাজ্য থেকে পদ্ম আমদানি করার দরকার নেই।
কলকাতার প্রসিদ্ধ মাল্লিকঘাট হোলসেল মার্কেটসহ অন্যান্য বাজারেও ইতিমধ্যে দাম কমেছে। এবার পদ্মফুল বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৩-৪ টাকায়। খুচরা দামে হয়তো দামের দ্বিগুণ হবে, তবুও সবচেয়ে ব্যস্ত দিনগুলোতেও প্রতি ফুলের দাম ১০ টাকার নিচে থাকবে। গত বছরের তুলনায় দামে বড় পার্থক্য রয়েছে।
এই দাম কমার সুবিধা পুজো কমিটিগুলোর জন্য দারুণ। আগের মতো ফুল কেনার জন্য বাজেট বরাদ্দের চিন্তা থাকবে না। বরঞ্চ সেই অর্থ পুজোর অন্যান্য অংশে ব্যয় করা যাবে, যা ভক্তদের অভিজ্ঞতাকে আরও সুন্দর করবে। যদিও কম দামে বিক্রি হওয়ায় চাষিরা হয়তো বড় লাভের আশা পূরণ করতে পারবেন না, তবুও সরবরাহ ও চাহিদার স্থিতিশীলতা পুরো অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক।