
‘আই লাভ মুহাম্মদ’ বিতর্কে যোগীর মন্তব্যে ক্ষুব্ধ জম্মু-কাশ্মীরের বিজেপি নেতা, পদত্যাগের হুমকিযোগী রাগিয়ে দিলেন বিজেপি নেতাকেই! উত্তরপ্রদেশে ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ আন্দোলনকে ঘিরে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সাম্প্রতিক মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জম্মু-কাশ্মীরের সিনিয়র বিজেপি নেতা জাহানজাইব সিরওয়াল। তিনি অভিযোগ করেছেন, যোগীর বক্তব্য ও রাজ্যের প্রশাসনের ভূমিকা “অগ্রহণযোগ্য” এবং এর প্রতিবাদে তিনি দল থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথাও বিবেচনা করছেন।
এক সাক্ষাৎকারে সিরওয়াল বলেন, “উত্তরপ্রদেশ সরকারের এই মনোভাব প্রধানমন্ত্রীর ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস’-এর দর্শনের পরিপন্থী। অন্যায় মামলা, অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ আর বিভাজনমূলক হুমকি দিয়ে সেই চেতনা ভঙ্গ করা হচ্ছে। তাই সংশোধনমূলক পদক্ষেপ না নেওয়া হলে আমার আর কোনো বিকল্প থাকবে না, দল থেকে ইস্তফা দিতেই হবে।”নিজেকে “গর্বিত মুসলিম ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বিজেপি নেতা” আখ্যা দিয়ে সিরওয়াল অভিযোগ করেছেন, “উত্তরপ্রদেশ সরকার মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করছে। ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ ব্যানারের মাধ্যমে যে ভক্তির প্রকাশ ঘটেছিল, সেটিকে অন্যায়ভাবে টার্গেট করা হয়েছে,” মন্তব্য তাঁর।

প্রসঙ্গত, নবীর নামে অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ স্লোগান তোলা শুরু হয়। ২৬ সেপ্টেম্বর উত্তরপ্রদেশের বেরেলিতে শুক্রবারের নামাজের পর এক মসজিদের বাইরে বিপুল ভিড় জমে। স্লোগান ও পোস্টার হাতে মানুষ সমবেত হলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সহিংসতার জেরে পুলিশ ৬৮ জনকে গ্রেপ্তার করে, যাঁদের মধ্যে স্থানীয় এক ইমামও ছিলেন।এই ঘটনার পর রাজ্যে ইন্টারনেট, ব্রডব্যান্ড ও এসএমএস পরিষেবা ২রা অক্টোবর বিকেল ৩টা থেকে ৪ঠা অক্টোবর বিকেল ৩টা পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
যোগী আদিত্যনাথ মন্তব্য করেন, “আইন ভাঙা যাদের স্বভাব, তাদের জন্য ‘ডেন্টিং-পেন্টিং’ প্রয়োজন। হিন্দু উৎসবের সময় যারা দাঙ্গা বাধাতে চায়, আমরা তাদের এমন শিক্ষা দিয়েছি যে ভবিষ্যৎ প্রজন্মও মনে রাখবে।”তিনি আরও বলেন, “বেরেলিতে যে মৌলানা দাঙ্গা বাধাতে চেয়েছিলেন, তাঁকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে— এখানে রাস্তা আটকানো বা কারফিউ চালানো যাবে না। আমরা এমন শিক্ষা দিয়েছি, যাতে আগামী প্রজন্মও দু’বার ভাববে।”যোগীর এই মন্তব্যে বিজেপির মধ্যেই অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। জাহানজাইব সিরওয়ালের হুঁশিয়ারি উপত্যকার রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।