
শনিবার পাক সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের নেতৃত্বে প্রকাশিত বিবৃতিতে পাকিস্তান সেনা সতর্ক করে জানায়, ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে সংঘাত শুরু হলে তা “বিপর্যয়কর ধ্বংসযজ্ঞ” ডেকে আনতে পারে। বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, ‘পাকিস্তানের সেনা শত্রুর ভূখণ্ডের প্রতিটি প্রান্তে যুদ্ধ পৌঁছে দিতে সক্ষম।”
পাক সেনার অভিযোগ, ভারতের “মানচিত্র থেকে মুছে দেব” ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যগুলি আসলে নতুন করে সামরিক আগ্রাসনের অজুহাত তৈরি করছে, যা ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর মতো আরও একটি অভিযান শুরুর ইঙ্গিত। এতে গোটা দক্ষিণ এশিয়ার জন্য ভয়ঙ্কর পরিণতি ঘটতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী শুক্রবার বলেন, পাকিস্তান যদি সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়া বন্ধ না করে তবে “বিশ্ব মানচিত্রে টিকে থাকতে পারবে না।” তিনি আরও জানান, অপারেশন সিন্দুরের সময় দিল্লি যে সংযম দেখিয়েছিল ভবিষ্যতের যুদ্ধে তা আর দেখানো হবে না।
ভারতীয় সেনাদের সর্বদা প্রস্তুত থাকার আহ্বানও জানান তিনি।তার আগেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ভারত প্রয়োজনে “যে কোনও সীমান্ত অতিক্রম করতে পারে”। একই দিনে ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রধান এপি সিংও স্পষ্ট করে দেন, পহেলগামে জঙ্গি হামলার পর মে মাসে ‘অপারেশন সিন্দুর’-এ ভারতীয় আঘাতে পাকিস্তানের অন্তত এক ডজন যুদ্ধবিমান ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে মার্কিন এফ-১৬ জেটও ছিল।
পাকিস্তান সেনা তাদের বিবৃতিতে এই সমস্ত বক্তব্যকে “ভ্রান্ত, উস্কানিমূলক ও যুদ্ধোন্মাদ” বলে কটাক্ষ করেছে। তারা স্পষ্ট জানিয়েছে, “যদি সংঘর্ষ শুরু হয়, পাকিস্তান বিন্দুমাত্র সংযম দেখাবে না। পাল্টা জবাব কঠোর ও অপ্রতিরোধ্য হবে।” ভারতের পাকিস্তানকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার হুমকির জবাবে পাকিস্তান সেনা বলেছে, “মুছে দেওয়া হলে, সেটি পারস্পরিক বিলোপে গড়াবে।”এরই মধ্যে গুজরাতের কচ্ছের রান অঞ্চলের কাছে ৯৬ কিমি দীর্ঘ ‘স্যার ক্রিক’ অঞ্চলে পাকিস্তানের সম্ভাব্য আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রাজনাথ সিং সতর্ক করে বলেন, “ভারত প্রয়োজনে এমন জবাব দেবে যা পাকিস্তানের ইতিহাস ও ভূগোল পাল্টে দিতে পারে।”

অন্যদিকে, পাকিস্তান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আরব সাগরের উপকূলে গওয়াদার জেলার পাশনি বন্দরে টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার প্রস্তাব দিয়েছে। এই প্রস্তাবে মার্কিন বিনিয়োগকারীরা পাকিস্তানের খনিজ সম্পদ আহরণের সুযোগ পাবে বলে জানা গিয়েছে।এটি এমন এক সময়ে ঘটছে যখন পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে সৌহার্দ্য বেড়েছে।
পাকিস্তান ট্রাম্পের নোবেল শান্তি পুরস্কারের আকাঙ্ক্ষাতেও সায় দিয়েছে। ট্রাম্প দাবি করেছেন, ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ তিনিই থামিয়েছেন। দিল্লি অবশ্য পরিষ্কার করে দিয়েছে, পাকিস্তানের অনুরোধে ভারত নিজেই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল।ভারতের এই অস্বীকৃতিই ট্রাম্পের ভারতের বিরুদ্ধে শুল্কনীতিতে কঠোর মনোভাব ও পাকিস্তান-প্রীতি প্রকাশের অন্যতম কারণ বলে কূটনৈতিক মহলের ধারণা।