
লাদাখের পরিবেশবিদ ও সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচুককে আটকের বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রী গীতাঞ্জলি আংমোর দায়ের করা হেবিয়াস কর্পাস রিটের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রকে নোটিস জারি করল শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট জানতে চায়, কেন তাঁর স্ত্রী গীতাঞ্জলি জে ওয়াংমোকে আগাম নোটিস দেওয়া হয়নি এবং কেন তাঁকে স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি?
ওয়াংচুককে গত ২৬ সেপ্টেম্বর লাদাখ থেকে গ্রেফতার করে যোধপুর সেন্ট্রাল জেলে পাঠানো হয়। তাঁকে জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (NSA) অধীনে আটক করা হয়। লাদাখকে পৃথক রাজ্যের স্বীকৃতির দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালাচ্ছিলেন সোনম ওয়াংচুক। লাদাখে ‘গণবিক্ষোভে’ উসকানির অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কেন সোনম ওয়াংচুককে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে আটক করা হয়েছে তা নিয়ে শীর্ষ আদালতে গিয়েছেন তাঁর স্ত্রী গীতাঞ্জলি আংমো। রিটে বলা হয়েছে, তাঁর স্বামীর আটক বেআইনি, স্বেচ্ছাচারী এবং জাতীয় নিরাপত্তা বা শৃঙ্খলার সঙ্গে প্রকৃতপক্ষে সম্পর্কিত নয়। বরং গণতান্ত্রিক ও পরিবেশ সংক্রান্ত আন্দোলনে সক্রিয় এক সমাজকর্মীকে স্তব্ধ করার উদ্দেশ্যেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। আংমোর পক্ষে সিনিয়র অ্যাডভোকেট কপিল সিব্বল আদালতে জানান, “আমরা এই আটকের বিরোধিতা করছি। প্রতিরোধমূলক এই আটক বেআইনি।”

পিটিশনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ওয়াংচুক কেবল অহিংস গান্ধীয় ধাঁচে আন্দোলন চালিয়েছেন, যা সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাঁর সাংবিধানিক অধিকার। সুতরাং তাঁর আটকের আদেশ মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী।
রিটে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, প্রতিরোধমূলক আটক সংক্রান্ত প্রক্রিয়াগত নিরাপত্তা বিধি মানা হয়নি, ফলে সংবিধানের ২১ ও ১৪ অনুচ্ছেদের অধীনে তাঁর স্বাধীনতা ও সমতার অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, আটকের কপি বা কারণ ওয়াংচুক বা তাঁর স্ত্রী কাউকেই জানানো হয়নি এবং তাঁকে লাদাখ থেকে এক হাজার কিলোমিটার দূরে যোধপুরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়াও বেআইনি।
যদিও কেন্দ্রের পক্ষে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান যে আটকের কারণ ওয়াংচুককে জানানো হয়েছে। তখন আদালত এই বক্তব্য নথিভুক্ত করে নোটিস জারি করার নির্দেশ দেয়। বিচারপতি অরবিন্দ কুমার ও বিচারপতি এন ভি অঞ্জারিয়ার ডিভিশন বেঞ্চ সংক্ষিপ্ত এই শুনানির পর কেন্দ্রের জবাব চেয়েছে। আদালতের রায় অনুযায়ী আটকের কারণ জানাতে হবে। পরিবারের সদস্যদের আটকের নোটিস দিতে হবে। আগামী ১৪ অক্টোবর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।