
পুজোর ছুটিতে মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় সফর শেষ করে বাড়ি ফেরার জন্য ট্রেন ধরতে যাওয়ার পথে এক ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনা। মৃত্যু হল ডানকুনির একটি স্কুলের তিন শিক্ষিকা, এক নাবালিকা ও গাড়ির চালক সহ মোট পাঁচ জনের। রবিবার সন্ধ্যা নাগাদ ছত্তিশগড়ের কবিরধাম জেলায় একটি বোলেরো গাড়ির সঙ্গে ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হয় পাঁচ জনের। মৃত তিন শিক্ষিকা হলেন পপি বর্মা, অন্বেষা সোম ও পরমা ভট্টাচার্য। পরমা ভট্টাচার্যের ছোট মেয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
সূত্রের খবর গত ২৯ সেপ্টেম্বর ডানকুনির শ্রী রামকৃষ্ণ বিদ্যাশ্রম গার্লস হাইস্কুলের চার শিক্ষিকা মুনমুন বাগ, পপি বর্মা, অন্বেষা সোম, ও পরমা ভট্টাচার্য তাঁদের সন্তানদের নিয়ে পুজোর ছুটিতে মধ্যপ্রদেশ ভ্রমণে বের হন। ভ্রমণ শেষে রবিবার বিলাসপুর থেকে ট্রেন ধরার জন্য চার চাকার গাড়িতে রওনা দেন। কিন্তু বিলাসপুর স্টেশনে পৌঁছানোর আগেই ভয়াবহ এই পথ দুর্ঘটনা প্রাণ কেড়ে নেয় চার জনের।
শ্রীরামপুরের বাসিন্দা মুনমুন বাগের স্বামী অভিজিৎ দাস জানান গত ২৯ সেপ্টেম্বর তাঁর স্ত্রী এবং তাঁর দশ বছরের ছেলে অর্নদীপকে নিয়ে স্কুলেরই আরও তিন শিক্ষিকার সঙ্গে মধ্যপ্রদেশ ঘুরতে যান। ওই তিন শিক্ষিকার সন্তানরাও তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। মোট ৯ জন ছুটিতে মধ্যপ্রদেশ ঘুরতে গিয়েছিলেন। রবিবার সন্ধ্যায় বিলাসপুর স্টেশন থেকে ট্রেনে করে হাওড়ার দিকে আসার কথা ছিল। কিন্তু বিলাসপুরে যাওয়ার পথেই দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় প্রশাসন আহতদের যখন হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন অ্যাম্বুলেন্স থেকে এক ব্যক্তি তাঁকে ফোন করে জানান যে তার স্ত্রী ও ছেলে পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁদেরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বর্তমানে তাঁর স্ত্রী ও ছেলে রায়পুরের জলবিহার কলোনিতে হরাইজেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সূত্রের খবর মধ্যপ্রদেশের খাজুরাহো, কানহা ফরেস্ট সহ অন্যান্য দর্শনীয় স্থান পরিদর্শনের পর চার শিক্ষিকা তাঁদের সন্তানদের নিয়ে একটি বোলেরো গাড়িতে করে ট্রেন ধরার জন্য বিলাসপুর স্টেশনের দিকে রওনা দেন। চালকসহ গাড়িতে মোট ১০ জন ছিলেন। বিলাসপুরে যাওয়ার পথে ছত্তিশগড়ের চিলপি থানার অন্তর্ভুক্ত আকালঘড়িয়া গ্রামের কাছে একটি ট্রাকের সঙ্গে বোলেরো গাড়িটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় পপি বর্মা, অন্বেষা সোম ও পরমা ভট্টাচার্য নামে তিন শিক্ষিকার। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় পরমা ভট্টাচার্যের ছোট মেয়ের এবং গাড়ির চালকের। গুরুতর আহত অবস্থায় মুনমুন বাগ ও তাঁর ছেলে, মৃত পপি বর্মার মেয়ে, অন্বেষা সোমের ছেলে ও পরমা ভট্টাচার্যের বড় মেয়েকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে আহত পাঁচ জনের মধ্যে দুই জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রায়পুরের একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এদিকে সোমবারই দুপুরে গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেসে করে রায়পুরের দিকে রওনা দিয়েছেন মুনমুন বাগের স্বামী অভিজিৎ দাস।