
বর্তমান দুনিয়ায় ৮ থেকে ৮০ সকলেই মোবাইল ফোনে অভ্যস্ত। মোবাইল ছাড়া জীবনটাই যেন অচল। এদের মধ্যে ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে যারা জন্মেছেন মানে জেন জেড তাদের মধ্যে মোবাইলের ব্যবহারটা মাত্রাছাড়া বিশেষ করে রাত্রে শোওয়ার সময় দীর্ঘক্ষণ ধরে মোবাইল স্ক্রল করা, ইন্টারনেট ব্যবহার, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোরাফেরা করা এগুলো চলতেই থাকে। আর তার ফলেই ঘুমের দফারফা, দীর্ঘক্ষণ ধরে এগুলো করলে ঘুম আসার জন্য প্রয়োজনীয় হরমোন মেলাটোনিনের ওপর প্রভাব পড়ে। ফলে শরীরে কমতে থাকে মেলাটোনিনের মাত্রা। ফলে ঘুম আসতে আসতে রাত কাবার হয়ে যায়।
কয়েকদিন আগে হওয়া একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যারা ঘুমোনোর এক ঘন্টা আগে মোবাইল ফোন বা অন্য কোনও গেজেটের ব্যবহার বন্ধ করে দেন তাদের তুলনায় যারা করেন না এই প্রথম দলটি দ্বিতীয় দলের তুলনায় দু ঘন্টা বেশি ঘুমোন। ফলে তাদের শরীর অনেক ঝরঝরে থাকে।
মনোস্তত্ত্ববিদ ডা. মেঘা আগারওয়াল-এর মতে প্রতিটি মানুষের সুস্থ থাকার জন্য ৮থেকে ১০ ঘণ্টার ঘুম দরকার। এর থেকে কম ঘুম হলে শরীরের নানা রকম সমস্যা দেখা যায়। যেমন দিনের পর দিন যদি রাতে গ্যাজেট নিয়ে কাজ করা হয় তাহলে শুধু যে মানসিক সমস্যার সূত্রপাত হয় তাই নয় তার সঙ্গে চিন্তাশক্তি ও চেতনা শক্তির উপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। নতুন হওয়া একটি সমীক্ষার ফলাফল জানাচ্ছে গত তিন বছরে অবসাদের হার ২৫ শতাংশ বেড়ে গেছে এবং এদের মধ্যে মহিলারা সংখ্যায় বেশি। একদিকে পড়াশোনার চাপ অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় কটা লাইক এল সেই চাপ আর তার সঙ্গে পারিপার্শ্বিক নানা চাপ মিলে স্ট্রেস হরমোন কটিসলের পরিমাণ বাড়তে থাকে। ফলে শরীরের স্বাভাবিক বডি ক্লক ছন্দটাই বিপন্ন হয়ে যায়। এর সঙ্গে পিউবার্টির নানা রকম হরমোনজনিত সমস্যা একত্র হয়ে পুরোটাই যায় ঘেঁটে।
তাহলে এর থেকে কি মুক্তি নেই ?
মনোবিদরা বলছেন অবশ্যই আছে ।
তাঁদের বক্তব্য রাত্রে শুতে যাওয়ার অন্তত এক ঘন্টা আগে সমস্ত গেজেট বন্ধ করে দিতে হবে। গেজেট থেকে যে নীল আলো বেরোয় সেটা চোখের পক্ষে ক্ষতিকর এমনকী শোনা যাবে না কানে হেডফোন লাগিয়ে কোনও কিছু। ঘরের সব আলো নিভিয়ে ডিমলাইট জ্বালিয়ে রাখুন। ঘরের পরিবেশ রাখুন শীতল যাতে সহজেই ঘুম এসে যায়।