
দুর্গাপুরে এক মেডিকেল ছাত্রীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই ঘটনায় উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। তার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে মন্তব্য করেছেন, তা রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে বিতর্ক তৈরি করেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “মেয়েরা যদি রাতের বেলা বাইরে না বেরোন, তাহলে এমন ঘটনা ঘটে না।” তিনি আরও বলেন, “হস্টেল কর্তৃপক্ষের উচিত, ছাত্রীদের রাতে বাইরে না যাওয়ার নিয়ম কঠোরভাবে অনুসরণ করানো।”
শুক্রবার রাতে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের এক ছাত্রী বন্ধুর সঙ্গে ডিনারে বের হন। অভিযোগ অনুযায়ী, অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচ জন তাকে অপহরণ করে গণধর্ষণ করে। পুলিশ ইতিমধ্যেই তিনজনকে গ্রেফতার করেছে এবং অপর দুইজনের খোঁজ চলছে।
মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের পর বিজেপির রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। দলের জাতীয় মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নারীত্বের কলঙ্ক। তিনি এমন একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী, যিনি মেয়েদের পাশে দাঁড়াতে পারেন না।” বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত আইটি-সেলের নেতা অমিত মালব্য বলেছেন, “যে মুখ্যমন্ত্রী মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে না, তাঁর রাজ্যের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই।”
পাশাপাশি ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন মাজি দুর্গাপুরের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য রাজ্য রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিজেপি তাঁর পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে, তবে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিবেশকে আরও উত্তপ্ত করবে।
ঘটনাটি নারী নিরাপত্তা এবং ছাত্রীদের সুরক্ষাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সমাজকে সচেতন করেছে। সমালোচকরা মনে করছেন, ‘ভিকটিম ব্লেমিং’-এর অভ্যাস বন্ধ করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাজ্য প্রশাসন এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বকে যৌথভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে।