
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতি দেশটিকে কূটনৈতিক ও আলোচনায় “অসাধারণ শক্তি” দিয়েছে। একই সঙ্গে তিনি আবারও দাবি করেছেন যে, তাঁর হস্তক্ষেপেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ হয়েছে।
রবিবার মধ্যপ্রাচ্যে গাজা যুদ্ধবিরতির পর ইজরায়েলি যুদ্ধবন্দি মুক্তি প্রক্রিয়ায় যোগ দিতে রওনা হওয়ার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “শুল্কনীতি আমাদের কূটনৈতিক ও আলোচনাগত শক্তি দিয়েছে। আমি কেবল শুল্কের মাধ্যমেই কয়েকটি যুদ্ধ বন্ধ করেছি। উদাহরণস্বরূপ, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। আমি বলেছিলাম, তোমরা যদি পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করো, আমি তোমাদের উভয়ের উপর বিশাল শুল্ক বসাব—১০০%, ১৫০%, এমনকি ২০০% পর্যন্ত।”
ট্রাম্প দাবি করেন, “আমি বলেছিলাম আমি শুল্ক বসাচ্ছি, আর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সব মিটে গিয়েছিল। যদি শুল্ক না থাকত, সেই যুদ্ধ কখনোই থামানো যেত না।”
তবে ভারতের পক্ষ থেকে বহুবার জানানো হয়েছে যে, ট্রাম্পের এই দাবির কোনও ভিত্তি নেই। নয়াদিল্লি পরিষ্কারভাবে বলেছে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়েছিল দুই দেশের সামরিক কর্তৃপক্ষের সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে, যুক্তরাষ্ট্র বা ট্রাম্পের কোনো মধ্যস্থতায় নয়। তবুও, ট্রাম্প প্রকাশ্যে একাধিকবার দাবি করেছেন যে তাঁর উদ্যোগেই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সংঘাতের অবসান ঘটে।
ট্রাম্প আরও বলেন, তিনি মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষে ফিরে এসে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের চলমান সংঘাত নিয়েও কাজ করতে পারেন। তাঁর ভাষায়, “এটি আমার অষ্টম যুদ্ধ যা আমি সমাধান করব। শুনেছি পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে এখন যুদ্ধ চলছে। আমি বলেছি, আমি ফিরে এসে এটা দেখব। আমি এখন আরেকটা যুদ্ধ মেটাচ্ছি, কারণ আমি যুদ্ধ থামাতে পারি।”
ট্রাম্প বলেন, তিনি যুদ্ধ মিটিয়ে এবং প্রাণ বাঁচিয়ে “লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন রক্ষা করেছেন”। তাঁর কথায়, “এটা একটা সম্মানের বিষয়। আমি মিলিয়ন মানুষের জীবন বাঁচিয়েছি। নোবেল কমিটির প্রতি ন্যায্য হতে গেলে বলতে হয়, ২০২৪ সালের জন্যই শান্তি পুরস্কার নির্ধারিত ছিল। কিন্তু অনেকে বলেন, ২০২৫ সালের ঘটনাগুলো এত গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে ব্যতিক্রম করা যেত। তবে আমি নোবেলের জন্য এটা করিনি, আমি করেছি জীবন বাঁচানোর জন্য।”
এই মন্তব্য এসেছে শুক্রবার নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণার পর, যখন ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদো ২০২৫ সালের শান্তি পুরস্কার পান। ট্রাম্প সেই ঘোষণার পর থেকেই প্রকাশ্যে বলেছেন যে, তাঁর শান্তি প্রচেষ্টার জন্য তাঁকেই পুরস্কৃত করা উচিত ছিল।