
তামিলনাড়ুর কারুরে অভিনেতা-রাজনীতিক ও তামিলাগা ভেট্রি কাজাগম (টিভিকে) প্রধান বিজয়ের সমাবেশে গত মাসে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ পদপিষ্টের ঘটনায় সিবিআই-কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
বিচারপতি জে.কে. মহেশ্বরী ও এন.ভি.আঞ্জারিয়ার বেঞ্চ সোমবার এই নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি, তদন্তের তদারকি করতে অবসরপ্রাপ্ত সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি অজয় রাস্তোগিকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিতে তামিলনাড়ু ক্যাডারের হলেও বর্তমানে রাজ্যের বাসিন্দা নন, এমন দুই আইপিএস অফিসারকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
শীর্ষ আদালত প্রশ্ন তোলে, মাদ্রাজ হাইকোর্টের একক বেঞ্চের চেন্নাই শাখার বিচারপতি কেন আগেই সিবিআই তদন্তের আবেদন নাকচ করার পর আবার নিজে থেকে এই মামলাটি গ্রহণ করে এমন রায় দেন, যেখানে পদপিষ্টের ঘটনাকে তিনি “দেশকে কাঁপিয়ে দেওয়া একটি দুর্ঘটনা” বলে অভিহিত করেছিলেন।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর কারুরে বিজয়ের সমাবেশে এই মর্মান্তিক ঘটনায় ৪১ জনের মৃত্যু হয় এবং শতাধিক আহত হন। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৫০ হাজার লোক সমাবেশস্থলে উপস্থিত ছিলেন, যার ধারণক্ষমতা ছিল মাত্র ১০ হাজার।
বিজয় দুপুর ১২টার পরিবর্তে সন্ধ্যা ৭টার দিকে সভাস্থলে পৌঁছন। ততক্ষণে ভিড় আরও বেড়ে যায় এবং তাঁর প্রচার বাস পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গেই আবারও লোকজনের হুড়োহুড়ি শুরু হয়। বহু মানুষ গাছে, ছাদে ও বৈদ্যুতিক খুঁটিতে উঠে পড়েছিলেন, ফলে প্রশাসনকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হয়েছিল। বিজয় পৌঁছতেই উপস্থিত ভক্তরা তাঁকে দেখতে একে অপরকে ঠেলতে থাকেন। এই বিশৃঙ্খলার মধ্যেই অনেকে অজ্ঞান হয়ে পড়েন, এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে।
ঘটনার পরদিনই বিজয় নিহতদের পরিবারের জন্য ২০ লক্ষ টাকা এবং আহতদের জন্য ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেন। রাজ্যব্যাপী তাঁর সফর স্থগিত করা হয়। ৭ অক্টোবর তিনি ভিডিয়ো কলে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন, তাঁদের সান্ত্বনা দেন এবং শীঘ্রই কারুরে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
এদিকে, টিভিকে-র পশ্চিম কারুর জেলার সম্পাদক মাথিয়াঝাগনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে গুরুতর গাফিলতির অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া দলের সাধারণ সম্পাদক বাস্সি আনন্দ এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্মল শেখরের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা হয়েছে— তাঁরা বর্তমানে পলাতক।