
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের যুব সমাজকে অস্ত্র চালানো ও সামরিক কৌশলের প্রশিক্ষণ দেওয়ার একটি বড় কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সরকারি উদ্যোগে প্রথম পর্যায়ে প্রায় ৮,৮৫০ জন যুবক ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ পাবেন। প্রশিক্ষণে তাইকোন্ডো, জুডো ও অন্যান্য মার্শাল আর্টের পাশাপাশি অগ্নেয়াস্ত্র চালানোর দক্ষতাও শেখানো হবে। সরকারের দাবি, এই পদক্ষেপের লক্ষ্য দেশের রিজার্ভ ফোর্স শক্তিশালী করা এবং বিপর্যয় মোকাবিলায় সক্ষম যুব সমাজ গঠন করা।
তবে আন্তর্জাতিক ও রাজনৈতিক মহলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আড়ালে গড়ে উঠতে পারে একটি নতুন ধরনের মিলিশিয়া বাহিনী। সাতটি বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবিরে সেনাবাহিনীর কিছু প্রভাবশালী অফিসার সরাসরি প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, যা আশঙ্কা তৈরি করেছে যে যুবকদের সামরিক দক্ষতা রাজনৈতিক বা ধর্মীয় উদ্দেশ্যে ব্যবহার হতে পারে।
পর্যবেক্ষকেরা দেখছেন, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় সরকারি ভবন ও থানায় যেসব অস্ত্র ব্যবহার হয়েছিল, সেই ধাঁচের অস্ত্র ব্যবহারে সক্ষম যুবক তৈরি করাই মূল লক্ষ্য হতে পারে। এটি সিরিয়া ও ইরাকের মিলিশিয়া মডেলের মতো একটি গঠন হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সমালোচকেরা বলছেন, সরকারি নামমাত্র “রিজার্ভ ফোর্স” তৈরি হলেও প্রকৃত লক্ষ্য হতে পারে মৌলবাদী সংগঠনগুলোর প্রভাব বৃদ্ধি।
এছাড়া এই পদক্ষেপ আঞ্চলিক নিরাপত্তার ভারসাম্যকে নষ্ট করার সম্ভাবনা তৈরি করছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো এ বিষয়ে সতর্ক। যুব সমাজকে হঠাৎ করে সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে কূটনৈতিক মহল আশঙ্কাজনক বলে দেখছে। আন্তর্জাতিক মহলে ধারণা করা হচ্ছে, মহম্মদ ইউনূসের সরকারের এই উদ্যোগ শুধু দেশের নিরাপত্তা নয়, সমগ্র উপমহাদেশের জন্য এক অশুভ সংকেত বহন করতে পারে।
এই পদক্ষেপ বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিসরে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে এবং ভবিষ্যতে যুব সমাজের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
