
ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট এক নজিরবিহীন রায় দিয়েছে। কয়েক বছর আগে এক নাবালিকাকে ধর্ষণের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত এক পুরুষের সাজা সম্পূর্ণভাবে বাতিল করা হয়েছে। এই মামলায় অভিযুক্তকে পকসো আইনের ধারা ৬ অনুযায়ী ১০ বছর এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৬ ধারায় ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
আপিল শুনানির সময় ঘটনার চিত্র সম্পূর্ণভাবে বদলে যায়। অভিযুক্ত এবং তরুণী বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্ক। ২০২১ সালে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন এবং তাদের এক বছর বয়সী সন্তান রয়েছে। তরুণী আদালতে হলফনামায় জানান, তিনি স্বামী ও সন্তানের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ জীবন কাটাতে চান এবং তার বিরুদ্ধে আর কোনও আইনি পদক্ষেপ না নেওয়া হোক। এই পরিস্থিতি বিবেচনা করে আদালত সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে সাজা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়।
আদালত জানিয়েছে, যদি অভিযুক্তকে জেলে পাঠানো হয়, তা কেবল তার নয়, তার পরিবার ও সমাজের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তবে আদালত স্পষ্টভাবে সতর্ক করেছে, অভিযুক্তকে তার স্ত্রী ও সন্তানকে জীবনের কোনো সময় পরিত্যাগ করতে পারবে না। তাদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা সারা জীবনের জন্য নিশ্চিত করতে হবে।
আইনি মহলে এই রায়কে নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট নিজে উল্লেখ করেছে, এটি কোনও দৃষ্টান্তমূলক রায় নয় এবং সম্পূর্ণ নির্দিষ্ট ও অনন্য পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই রায় সামাজিক ও আইনগত বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। অনেকের মতে এটি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে নেওয়া সিদ্ধান্ত, আবার অনেকে বিষয়টি আইনের কঠোরতার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্নও তুলেছেন। তবে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করেছে, এই রায় কোনও সাধারণ নীতি হিসেবে গণ্য করা যাবে না।
